১৬ বছর পর ফের দর্শকদের মুগ্ধ করতে চলতি মাসে মুক্তি পেতে যাচ্ছে ‘অ্যাভাটার’ সিরিজের তৃতীয় সিনেমা। এবারও সিরিজটিতে থাকছে পরিবেশ ও প্রকৃতিকে কেন্দ্র করে ভিজ্যুয়ালের চমক। আশা করা হচ্ছে, ইতিহাসের অন্যতম সর্বোচ্চ আয় করা ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলির মধ্যে একটির সাফল্যের ধারাবাহিকতা রক্ষা করবে। এ
জেমস ক্যামেরনের পরিচালিত ‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’ সিনেমাটি আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে একযোগে মুক্তি পাবে। ২০০৯ সালে সিরিজের প্রথম সিনেমা ‘অ্যাভাটার’ বিশ্বব্যাপী ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার আয় করে।
২০২২ সালে মুক্তি পায় সিরিজের দ্বিতীয় সিনেমা ‘দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’। দ্য হলিউড রিপোর্টার-এর তথ্যমতে, এটি করোনা পরবর্তী সময়েও প্রায় ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার আয় করে। চলতি সপ্তাহে নতুন সিনেমার প্রিমিয়ার শো হয়েছে হলিউড ও প্যারিসে।
এবারের সিরিজে দর্শকরা দেখতে পাবেন নায়ক জ্যাক (স্যাম ওয়ার্থিংটন) এখন ‘টোরুক ম্যাকটো’, প্যান্ডোরার কিংবদন্তি যোদ্ধা। তার স্ত্রী নেটিরি (জো সালদানা)। তারা তাদের বড় ছেলে নেটেয়ামের মৃত্যুর শোক সামলে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
তারা তাদের তিন সন্তান নিয়ে নতুন করে জীবন গড়ার চেষ্টা করছেন। যাদের মধ্যে রয়েছে কিরি, একজন দত্তক নেওয়া নাভি কিশোরী, যার চরিত্রে অভিনয় করেছেন সিগার্নি উইভার এবং আরেকজন মানব স্পাইডার (জ্যাক চ্যাম্পিয়ন), যাকে নেটিরি ছাড়া সবাই পরিবারের অংশ হিসেবে গণ্য করে।
ক্যামেরন গত শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) প্যারিসে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দর্শকরা দেখবেন, সন্তানরা বড় হয়ে নিজেদের পরিচয় খুঁজছে। কারণ তাদের মা পুরোপুরি নাভি প্রজাতির। আর বাবা অন্য গ্রহ থেকে আসা। এই সংকর জীবন তাদের হাসি-আনন্দের সঙ্গে এক ঝাঁক চ্যালেঞ্জও নিয়ে আসে।
৭১ বছর বয়সী কানাডিয়ান পরিচালক আরও বলেন, আমরা মূলত শরণার্থী বা বাস্তুচ্যুত অভিবাসীদের পারিবারিক অবস্থাকে দেখানোর চেষ্টা করেছি। মানুষ এটি দেখে সহজেই বাস্তবতার সংযোগ স্থাপন করতে পারবে।
ভ্রমণের পথে নায়করা মুখোমুখি হন মাংকওয়ান বা অ্যাশ পিপল-এর সঙ্গে। এটি একটি নাভি সম্প্রদায়, যার এলাকা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন তারা জীবনধারণের জন্য লুটপাট করে।
মাংকওয়ানদের নেতৃত্ব দেন ভ্যারাং। এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন বিশ্বখ্যাত কৌতুক অভিনেতা চার্লি চ্যাপলিনের নাতনি উনা চ্যাপলিন। তিনি নাভির অন্ধকার দিক দেখান, যা আগে শুধুই কল্যাণময় ও প্রকৃতির সঙ্গে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ হিসেবে চিত্রিত হয়েছিল। এর বিপরীতে মানুষ লুটপাটে আসক্ত এবং প্রকৃতির সম্পদ শোষণ করতে চাইছে।
তিনি নাভি সম্প্রদায়ের অন্ধকার দিক দেখান। আগে তারা শুধুই শান্তিপ্রিয় ও প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করত। এবার তাদের আরও জটিল ও ভিন্ন দিক দেখা যাবে। মানুষের লুটপাটের লোভ আবারও প্রকৃতির সঙ্গে সংঘর্ষের গল্পে নতুন মোড় নিয়ে আসবে।
প্যান্ডোরার বাসিন্দাদের ফের লড়তে হবে ‘স্কাই পিপল’ বা রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মানুষদের বিরুদ্ধে। তারা তুলকুন নামের সামুদ্রিক প্রাণী শিকার করতে চাইছে। লক্ষ্য তাদের মস্তিষ্ক থেকে ‘অ্যামরিটা’ সংগ্রহ।
তুলকুন হল প্যান্ডোরা গ্রহের বিশাল ও বুদ্ধিমান সামুদ্রিক প্রাণী, যাদের মস্তিষ্ক থেকে ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণে মূল্যবান পদার্থ পাওয়া যায়। মূল ‘অ্যাভাটার’ গল্প ১৯৯৫ সালে ক্যামেরন নিজেই লিখেছিলেন। পরিচালকের মতে, সেটিতে পরিবেশ বিষয়ক বার্তা অনেক বেশি স্পষ্ট ছিল।
বিডি প্রতিদিন/কামাল