প্রকৃতিতে এখন অগ্রহায়ণ। এ সময় ক্ষেতের সোনালি ধান গোলায় ওঠে, নতুন চালের গন্ধে ভরে যায় ঘরদোর। গ্রামবাংলার এই চিরায়ত সংস্কৃতিকে হাজারো বছরের। তরুণ প্রজন্মের কাছে সংস্কৃতির বার্তা পৌঁছে দিতে বসুন্ধরা শুভসংঘ ঝিনাইদহ জেলা শাখার উদ্যোগে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে শহরের ফজর আলী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ মিলনায়তনে ‘শুভ কাজে সবার পাশে’ প্রতিপাদ্যকে ধারণ করেন নবগঠিত জেলা কমিটি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঝিনাইদহ জেলা শুভসংঘের সভাপতি রেজাউল ইসলাম। সাধারণ সম্পাদক কেয়া রাণী প্রামাণিক দক্ষ উপস্থাপনার মাধ্যমে পুরো অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ প্রদীপ কুমার বিশ্বাস, আব্দুল মতিন, অধ্যক্ষ জয়া রাণী চন্দসহ অতিথিরা নবগঠিত কমিটির সদস্যদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে পরিচিতি পর্ব সম্পন্ন করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি সরস্বতী সাহা, তাপস কুমার কুণ্ডু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল হোসেন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক সবুজ আহম্মেদ, দপ্তর সম্পাদক আল নাহিয়ান, নির্বাহী সদস্য খালিদ হাসান, এখলাছুর রহমানসহ জেলা শাখার অন্যান্য সদস্যরা।
আলোচনা সভায় বক্তারা শুভসংঘের ভূমিকা, সামাজিক দায়িত্ববোধ ও সাংস্কৃতিক চর্চার গুরুত্ব তুলে ধরেন। অধ্যক্ষ প্রদীপ কুমার বিশ্বাস বলেন, অতীতের ধারাবাহিকতায় শ্লোগানের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে শুভসংঘকে কাজ করতে হবে। আশা করি, ঝিনাইদহ জেলা শাখা ভবিষ্যতে মানবিক ও সামাজিক কাজের মাধ্যমে জেলার গৌরব বাড়িয়ে তুলবে।
সিনিয়র সহসভাপতি ও সহকারী অধ্যাপক (অবসারপ্রাপ্ত) কে এম সালেহ বলেন, বাঙালির ঐতিহ্যবাহী পিঠাপুলি আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। শুভসংঘ এমন আয়োজনের মাধ্যমে আমাদের সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের কাছে দারুণভাবে তুলে ধরেছে।
সভাপতি রেজাউল ইসলাম বলেন, বসুন্ধরা শুভসংঘ শুধুই একটি সংগঠন নয়, এটি মানুষের প্রান্তিক জীবনে আলো ছড়ানোর স্বপ্ন। নবগঠিত কমিটি ভবিষ্যতে ঝিনাইদহ জেলায় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
বক্তারা সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি, মানবিক কাজে অংশগ্রহণ, সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং তরুণদের নেতৃত্ব বিকাশ সবকিছুতেই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
পরিচিতি ও আলোচনা পর্ব শেষে শুরু হয় বর্ণিল পিঠা উৎসব। ভাপা, চিতই, পাকন, পোয়া, পাটিসাপটা, লাড্ডুসহ নানা ধরনের পিঠা আর গ্রামীণ খাবারে মুখর হয়ে ওঠে মিলনায়তন প্রাঙ্গণ।
সদস্য, শিক্ষার্থী, শিক্ষক সকলের অংশগ্রহণে উৎসবটি হয়ে ওঠে এক অনন্দঘন মিলনমেলা। অতিথিরা এ আয়োজন শুধু একটি উৎসব নয়, বরং হারিয়ে যাওয়া বাঙালির ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার একটি যৌথ উদ্যোগ।
বিডি প্রতিদিন/কামাল