সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে এটা সবাই মানছেন। কিন্তু সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে কি না- সেই উদ্বেগ এখনো দূর হয়নি। ড. ইউনূস বলেছেন, তিনি ইতিহাসের সেরা নির্বাচন উপহার দেবেন, আমরা তারই অপেক্ষায় আছি।’
তিনি গতকাল দুপুরে চট্টগ্রামের একটি হোটেলে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে প্রাক-নির্বাচনি উদ্যোগ ‘আঞ্চলিক পরামর্শ সভা’ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে এমন কোনো জরিপ নেই যা বলে নির্বাচন হবে না। বরং নির্বাচন এখন অবধারিত। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ রয়ে গেছে। সরকার ও নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হলো এই শঙ্কা দূর করে অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা।’ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘গত এক বছরের অভিজ্ঞতা রাজনৈতিক দলগুলোকে বুঝিয়েছে কিছু না করে আর পার পাওয়া যাবে না। বড় ধরনের অন্যায় বা দুঃশাসন করলে দেশে অবস্থান করাই কঠিন হয়ে পড়বে। এই উপলব্ধি তৈরি হয়েছে। এটি টেকসই হবে কি না সেটা এখনো নিশ্চিত নয়।’ তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন অঞ্চলের নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে সবাই দক্ষ প্রশাসন, স্বাধীন বিচারব্যবস্থা এবং নিরপেক্ষ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চান। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের ইশতেহারে এসব বিষয় কীভাবে গুরুত্ব দেবে তা এখন দেখার বিষয়। তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো ঘোষিত প্রতিশ্রুতিগুলোর বাস্তবায়ন করা।’ তিনি জানান, আলোচনায় চট্টগ্রামের বাসিন্দা, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সুশাসন, জবাবদিহি, আইনের শাসন ও নিরাপত্তার দাবি জোরালোভাবে এসেছে। রাজনীতিবিদদের দুর্নীতিমুক্ত থাকা এবং জবাবদিহির দাবিই সবচেয়ে বেশি উঠে এসেছে। সরকারের আয়ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিয়ে দেবপ্রিয় বলেন, ‘রাজনীতিবিদদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সম্পদের হিসাব প্রতি তিন বা ছয় মাস অন্তর প্রকাশের দাবি উঠেছে। আগের সরকার যেমন তা পূরণ করতে পারেনি, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও তা করেনি। ফলে ভবিষ্যৎ সরকারও একই পথ অনুসরণ করতে পারে- এ আশঙ্কা অনেকের মধ্যে রয়েছে।’ সভায় অন্যদের মধ্যে সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, শিক্ষাবিদ মু. সিকান্দার খান, মোহাম্মদ নাজিমুদ্দিন, প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, চিকিৎসক, আইনজীবী, সংস্কৃতিকর্মীসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।