পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত ছেড়ে তৃতীয় কোনো দেশে যেতে পারেন, কূটনৈতিক চ্যানেলে এমন কোনো তথ্য নেই। এটার বিষয়ে বাংলাদেশের কিছু করার নাই। তবে আমরা চাই, উনি ফেরত আসুক।’ গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনাকে ফেরানোর বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতকে রাজি হতে হবে অথবা চাইতে হবে তাকে ফেরত পাঠানোর। আমরা রাজি করানোর চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারব, এইটুকুই। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারব না। তিনি বলেন, ভারতকে বাদ দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তান যে নতুন ব্লক তৈরির কথা বলছে, সেখানে বাংলাদেশ চাইলে যুক্ত হতে পারে। তবে ভারতকে বাদ দিয়ে নেপাল বা ভুটানের পক্ষে পাকিস্তানের সঙ্গে জোট করা সম্ভব নয়। আমাদের পক্ষে সম্ভব। জোট গঠনের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, কোনো একদিন এর অগ্রগতি ঘটতে পারে, তবে এখন এ বিষয়ে বেশি কিছু বলার অবস্থায় নেই।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, এটা একটি প্রক্রিয়ার বিষয়। দেখা যাক, আমরা কতদূর যেতে পারি। র্যাবের কাজে স্পষ্টত অনেক অগ্রগতি হয়েছে, এটা অনেকে স্বীকার করেন। গত ১৫ বছরে র্যাব যা করেছে, সে তুলনায় কিছু অভিযোগ থাকতে পারে। তবে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এই সরকারের প্রচেষ্টার কোনো অভাব নেই। কারও মানবাধিকার যেন লঙ্ঘিত না হয়, কেউ যেন গুম না হয়, কেউ যেন বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার না হয়, এ বিষয়ে আমাদের শতভাগ কমিটমেন্ট আছে। তিনি আরও বলেন, ডিজিএফআইয়ের মতো প্রতিষ্ঠান সব দেশে আছে; এটা বন্ধ করা সহজ নয়। মানবাধিকার ইস্যুতে বিদেশি কোনো নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা নেই।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) জানিয়েছে, বিগত ১১ মাসে বাংলাদেশে ২৯ জন বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন। এ নিয়ে উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্র ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কোনো বার্তা এসেছে কি না; জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এটার বিস্তারিত তথ্য আমি বলতে পারব না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভালো বলতে পারবে। কোনো প্রতিষ্ঠান আমার লেভেল পর্যন্ত অন্তত এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ দেয়নি।
ভিসা-সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ফেক ডকুমেন্ট তৈরি বন্ধ না হলে বাংলাদেশের ভিসা-সংক্রান্ত সমস্যা সমাধান হবে না। শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রদানের বিষয় সেসব দেশের অধীনে। দেশে নতুন কোনো মিশন খোলা সময়সাপেক্ষ বিষয়। অনেকগুলো মিশন অনুমোদিত কিন্তু আর্থিক কারণে তা হচ্ছে না।