চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের লিজ দেওয়ার প্রতিবাদে ঢাকা ও চট্টগ্রামে পতাকামিছিল এবং সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি ‘বাংলাদেশ ফার্স্ট’ ব্যানারে গতকাল ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। এরপর শাহবাগ মোড় পর্যন্ত পতাকামিছিল করেন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। সমাবেশে সংগঠনের আহ্বায়ক জিয়াউল হক বলেন, মানুষকে দুর্নীতি, চাঁদাবাজির কথা বলে সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক বন্দর ও লজিস্টিকস কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ড আনা হচ্ছে। এ কোম্পানির সঙ্গে ভারত, ইসরায়েল এবং আমেরিকার একাধিক চুক্তি আছে। তিনি আরও বলেন, আধুনিক বিশ্বে বহুপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে একটা দেশ আরেকটা দেশে প্রবেশ করে। ডিপি ওয়ার্ল্ডের মাধ্যমে ভারত চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থান করবে এবং ইসরায়েল প্রবেশাধিকার পেয়ে যাবে। এপিএম টার্মিনালের মাধ্যমে আমেরিকাকে একটা ঘাঁটি দেওয়া হবে। তিনি বলেন, দুর্নীতি, চাঁদাবাজির কথা বলে বিদেশিদের হাতে বন্দর লিজ দেওয়া দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া। কাজেই সরকারের এ উদ্যোগ ছাত্রসমাজ কখনো মেনে নিতে পারে না। ভারত-ইসরায়েলের পোর্ট অপারেটর এলেও মানুষ তার প্রতিবাদ করত।
চট্টগ্রামে স্কপের লাল পতাকা মিছিল : চট্টগ্রাম থেকে বিশেষ প্রতিনিধি জানান, এনসিটি ইজারা প্রক্রিয়া বন্ধ এবং লালদিয়ার চর ও পানগাঁও টার্মিনালের চুক্তি বাতিলের দাবিতে গতকাল নগরীর দেওয়ানহাট মোড়ে সমাবেশ ও বন্দর অভিমুখে লাল পতাকা মিছিল করেছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। পুলিশ মিছিলটি আগ্রাবাদ মোড়ে থামিয়ে দেয়। এর আগে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহারের সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সঞ্চালনা করেন ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি) জেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ইফতেখার কামাল খান। সমাবেশে টিইউসি চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি ও শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য তপন দত্ত বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড এবং কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নৈতিক বা আইনগত এখতিয়ার রাখে না। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ইজারা দিলে তা দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করবে। সভাপতির বক্তব্যে কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার বলেন, ঘুষ-দুর্নীতির অজুহাত তুলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এস কে খোদা তোতন, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শ ম জামাল উদ্দিন, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সভাপতি খোরশেদুল আলম প্রমুখ।