বাংলাদেশ এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের আনুষ্ঠানিক পথে এগোচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে অর্থনীতির ভিত্তি ভেঙে পড়ছে। কিন্তু অর্থনীতির ভিতরের বাস্তব চিত্র আশাবাদী গল্পটিকে টেনে নামাচ্ছে। সরকার মাইলফলক উদ্যাপন করছে, কিন্তু সত্য আরও কঠোর : ৯-১০ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি, ক্রমবর্ধমান ডলার সংকট, ধসে পড়া রিজার্ভ, বেড়ে চলা বৈদেশিক ঋণ, ব্যাংকিং খাতের অস্থিরতা এবং অসুস্থ ব্যাংকিংব্যবস্থা, সব মিলিয়ে মসৃণ রূপান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিযোগিতা সক্ষমতাকেই ক্ষয় করেছে। ৯-১০ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি, ডলারসংকট, রিজার্ভের পতন, বেড়ে চলা বৈদেশিক ঋণ, সব মিলিয়ে দেশের অর্থনৈতিক মৌল ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই বাস্তবতায় গ্র্যাজুয়েশন উদ্যাপন বরং ভঙ্গুরতার সতর্কবার্তাই ফিরিয়ে দিচ্ছে।
রপ্তানির সংকট : একমুখী নির্ভরতা ও প্রতিযোগিতা হ্রাস
বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৮৪ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে, তবু নীতিতে কোনো পরিবর্তন নেই। বিশ্ববাজারে চাহিদা কমা, উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি ও দক্ষতার ঘাটতি মিলিয়ে এ খাতের প্রতিযোগিতা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। উৎপাদনশীলতা দীর্ঘদিন স্থবির, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি হচ্ছে না। জ্বালানি ব্যয়ের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি শিল্পে চাপ বাড়িয়েছে; লজিস্টিক ঘাটতি ও প্রশাসনিক দুর্বলতা বিনিয়োগের গতি কমিয়েছে। অর্থনীতির এত বড় ভিত্তি যখন একক খাতনির্ভর, তখন বৈশ্বিক যে কোনো ধাক্কাই দেশকে প্রায় সঙ্গে সঙ্গে বিপন্ন করে। অথচ রপ্তানি বৈচিত্র্যতার কোনো বাস্তব রোডম্যাপ নেই। এভাবে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের প্রস্তুতি হয় না; এভাবে দেশ ঝুঁকির ফাঁদে ঢুকে পড়ে।
বৈদেশিক ঋণ : ধীরে জমা একটি নীরব দুর্যোগ
বাড়তে থাকা বৈদেশিক ঋণ ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ এখন একটি বড় ঝুঁকি। ঋণ রপ্তানি আয়ের চেয়ে বেশি গতিতে বাড়ছে এবং বহু মেগা প্রকল্পের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হওয়ায় ঋণ পরিশোধ দ্বিগুণ হতে চলেছে। সরকারি-বেসরকারি ও গ্যারান্টিযুক্ত সব মিলিয়ে বৈদেশিক ঋণ ইতোমধ্যে ১২৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, মাথাপিছু জলবায়ু ঋণ ৮০ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
ঋণ-রপ্তানি অনুপাত ২০০ শতাংশ অতিক্রম করে যা অবৈচিত্র্যময় অর্থনীতির জন্য আইএমএফের নিরাপদ ঋণসীমা অনেক আগেই অতিক্রম করেছে। ২০১৮ সালে যেখানে বার্ষিক ঋণ পরিশোধ ছিল ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার, তা এখন বেড়ে ৪ বিলিয়নের বেশি; ২০২৭ সালে এ চাপ ৭-৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে। রিজার্ভ ২০২১ সালের ৪৮ বিলিয়ন ডলার থেকে অর্ধেকে নেমে আসা এ প্রবণতাকে আরও উদ্বেগজনক করে তুলেছে। ঋণনির্ভর মেগা প্রকল্পগুলো বৈদেশিক আয় সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হওয়ায় এর দায় পরিশোধও হবে রিজার্ভ থেকেই, যা দীর্ঘ মেয়াদে টেকসই নয়।
মেগা প্রকল্প ও জ্বালানি বিনিয়োগ : ব্যয়ের চাপে বৃদ্ধি পাচ্ছে ঝুঁকি
অতিমূল্যের কয়লা, এলএনজি এবং ওভারপ্রাইসড আইপিপি চুক্তির কারণে জ্বালানি খাতে বার্ষিক ক্যাপাসিটি পেমেন্ট ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। টাকার অবমূল্যায়নে এসব প্রকল্পের ঋণ পরিশোধ আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। টাকা দুর্বল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকি আরও বাড়ছে, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে ঋণ ব্যয়ের হঠাৎ বৃদ্ধি এর পরিষ্কার উদাহরণ। উচ্চমূল্যের, কম কার্যকর জ্বালানি ও অবকাঠামো ঋণ দেশের ব্যালান্স শিটকে আরও দুর্বল করেছে।
রূপপুর প্রকল্পে ঋণ ব্যয় হঠাৎ বেড়ে যাওয়া এর বড় উদাহরণ। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, এই প্রকল্পগুলো দেশের বৈদেশিক আয় বাড়াতে সামান্যও ভূমিকা রাখছে না, বরং অর্থনীতির দায়
বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশ অতিমূল্যের কয়লা ও এলএনজি প্রকল্প, ওভারপ্রাইসড আইপিপি চুক্তি এবং ২-৪ শতাংশ সুদের ডলারভিত্তিক মেগা প্রকল্পে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে, যাদের লাভক্ষতির হিসাব অত্যন্ত দুর্বল। ফলে দেশ এখন আটকে আছে, ক) ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি বার্ষিক ক্যাপাসিটি পেমেন্টে; খ) উচ্চ জ্বালানি আমদানি নির্ভরতায়; এবং গ) ডলার আয়ের উৎসবিহীন দীর্ঘমেয়াদি দায়ের চাপে।
অনুদানভিত্তিক ঋণ কমে বাণিজ্যিক হারে ঋণ নিলে উৎপাদন ব্যয় আরও বাড়বে। দ্রুত শাসনব্যবস্থার সংস্কার ছাড়া বাংলাদেশ ঋণনির্ভর ভঙ্গুরতার ফাঁদে আটকে যেতে পারে, যেখানে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন কেবল প্রতীকী অর্জন হয়ে দাঁড়াবে, কিন্তু অর্থনৈতিক স্থিতি ও প্রতিযোগিতা শক্তি ভেঙে পড়বে।
এলডিসি-উত্তর বাস্তবতা : বাড়তি দায়, কম সুবিধা
২০২৬-এর পর বাংলাদেশ হারাবে জিএসপিসহ বেশ কিছু শুল্ক সুবিধা। তৈরি পোশাক রপ্তানির ব্যয় বেড়ে যাবে। একই সঙ্গে ঋণের সুদহার বাড়বে, অনুদান কমে আসবে, প্রকল্প ঋণে কঠোর শর্ত আরোপ হবে, বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার চাপ আরও বাড়বে। এমন পরিস্থিতিতে রপ্তানি বৈচিত্র্য, শক্তিশালী আর্থিক খাত ও দক্ষ জনশক্তির অভাব দেশকে একটি গভীর ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিতে পারে। কিন্তু প্রয়োজনীয় কাঠামোগত সংস্কার, ব্যাংকিং শুদ্ধীকরণ, শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন, রপ্তানি বৈচিত্র্যতা, সবই খুব বেশি পিছিয়ে। সংকুচিত রপ্তানি ঝুড়ি ও চলমান ডলার সংকট মিলিয়ে ঋণ পরিশোধের ঝুঁকি আরও মারাত্মক হচ্ছে। প্রস্তুতি ছাড়া গ্র্যাজুয়েশন মানে ঋণঝুঁকির আরও গভীর খাদে পতন হতে পারে।
ব্যাংকিং খাত : আস্থাহীনতা ও সিস্টেমিক ঝুঁকি
অপ্রকাশিতসহ মোট দুর্বল ঋণ এখন ৩ লাখ কোটি টাকার বেশি। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, ঋণখেলাপির প্রসার, capital shortfall এবং দুর্বল নজরদারি ব্যাংকিং খাতকে বিপর্যস্ত করেছে। ডলারসংকটের অন্যতম কারণও এ খাতের অব্যবস্থাপনা। একটি স্থিতিশীল ব্যাংকিংব্যবস্থা ছাড়া এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পরবর্তী আর্থিক চাপ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।
সামাজিক সূচক : গ্র্যাজুয়েশন দাবিকে দুর্বল করছে
সামাজিক সূচক গ্র্যাজুয়েশন দাবিকে দুর্বল করে। বাস্তব সামাজিক চিত্র উদ্বেগজনক, বর্তমানে দেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ দারিদ্র্যতায় ভুগছে। যুব বেকারত্ব ২৮ শতাংশের বেশি। বাস্তব বা প্রকৃত মজুরি কমছে। পড়াশোনার মান নেমে যাওয়ায় শেখা ঠিকভাবে হচ্ছে, ফলে উৎপাদনশীলতা কমছে, নিম্নমানের শিক্ষা উৎপাদনশীলতা হ্রাস করছে। জলবায়ুজনিত দুর্যোগে উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলো ঢাকার বস্তিতে ঠাঁই নিচ্ছে। এসব সূচক জাতিসংঘের গ্র্যাজুয়েশনের মানদণ্ড পূরণের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বাস্তবতা তুলে ধরে। যুবসমাজ কর্মহীন এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠী সুরক্ষাহীন থাকলে কোনো গ্র্যাজুয়েশনই টেকসই হতে পারে না। গ্র্যাজুয়েশন কৌশল দাঁড়িয়ে আছে আশাবাদের ওপর, সংস্কারের ভিত্তিতে নয়।
জলবায়ু ঝুঁকি এবং প্রকৃতির ক্ষয় ও দূষণ : অদৃশ্য ক্ষতির বোঝা
বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রতিবছর জলবায়ু বিপর্যয়ে প্রায় জিডিপির ১-২ শতাংশ হারাচ্ছে। বায়ু, পানিদূষণসহ নদীভাঙন, বন্যা, লবণাক্ততা, খরা এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি, সবকিছু মিলিয়ে প্রকৃতি ও পরিবেশের অবক্ষয় অর্থনীতির ওপর দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি ডেকে আনছে। শিল্পদূষণ, বায়ুদূষণ ও প্লাস্টিকদূষণের নিয়ন্ত্রণ ব্যর্থতা উৎপাদনশীলতা কমিয়ে দিচ্ছে, ব্যয় বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল ক্রমেই মরুময়তার দিকে এগোচ্ছে। অন্যদিকে দক্ষিণাঞ্চলে পানি দুষ্প্রাপ্য হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রতিবছরে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হলেও বিদেশি উৎস থেকে ৫ শতাংশ অর্থও পাচ্ছে না। এ পরিপ্রেক্ষিতে স্বল্পোন্নত দেশের স্ট্যাটাস থেকে বের হলে অনুদান আর পাবে না।
ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা : অর্থনীতির ওপর অতিরিক্ত চাপ
মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ, প্রায় ১৫ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর চাপ, চীন-যুক্তরাষ্ট্র প্রতিযোগিতা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা বাংলাদেশের বাণিজ্য, মুদ্রানীতি ও জ্বালানি নিরাপত্তায় বহুমুখী চাপ তৈরি করেছে। বহুপাক্ষিক ঋণ কমছে, আর বিলম্বিত প্রকল্প ব্যয় বাড়াচ্ছে। বৈদেশিক নীতি ও অর্থনৈতিক অগ্রাধিকারে ভুল কৌশল দেশকে ঋণের ফাঁদের দিকে নিয়ে যাবে।
গ্র্যাজুয়েশনের আসল প্রশ্ন : বাংলাদেশ কি প্রস্তুত?
গ্র্যাজুয়েশন কৌশল দাঁড়িয়ে আছে আশাবাদের ওপর, সংস্কারের ভিত্তিতে নয়। সরকারের গ্র্যাজুয়েশন কৌশল দাঁড়িয়ে আছে অতিরিক্ত আশাবাদ, দুর্বল জবাবদিহি এবং ফুলানো জিডিপি আখ্যানের ওপর; অথচ জাতিসংঘের সংস্কারের নিচের শর্তগুলো উপেক্ষিত-
* নীতিনিষ্ঠ প্রাকৃতিক অধিকারভিত্তিক শাসন
* শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান
* আর্থিক স্বচ্ছতা ও ব্যয় নিয়ন্ত্রণ
* ব্যাংকিং খাতের কাঠামোগত সংস্কার
* রপ্তানি বৈচিত্র্য ও প্রযুক্তিনির্ভর শিল্পনীতি
* জলবায়ু-সহনশীল ও প্রাকৃতিক অধিকারসম্মত বিনিয়োগ
* দক্ষ শ্রমশক্তি ও সামাজিক সুরক্ষা সম্প্রসারণ
* জুলাই চার্টারের সময়বদ্ধ বাস্তবায়ন।
এসবের কোনোটিই প্রয়োজনীয় গতিতে এগোচ্ছে না। বরং এলিটকেন্দ্রিক প্রবৃদ্ধি, ব্যাংকঋণমুক্তি, পুঁজি পাচার, জ্বালানি সিন্ডিকেট, প্রাকৃতিক সম্পদভিত্তির দ্রুত ক্ষয়, দূষণ ও ভেজাল খাদ্যের কারণে বাড়তি স্বাস্থ্য ব্যয় এবং অন্তর্ভুক্তির সংকোচন, সব মিলিয়ে গ্র্যাজুয়েশন-পরবর্তী ঝাঁকুনিকে আরও ভয়াবহ করে তুলছে।
এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন কোনো ট্রফি নয়, এটি একটি স্ট্রেস টেস্ট। আর বাংলাদেশ সেই পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ব্যর্থ হচ্ছে, এই পরীক্ষায় টিকে থাকতে হলে জরুরি এসব পদক্ষেপ ছাড়া গ্র্যাজুয়েশন হবে কাগুজে সাফল্য, বাস্তবে ভঙ্গুরতা আরও গভীর হবে। বাংলাদেশ গ্র্যাজুয়েশন করতে চাচ্ছে পরিসংখ্যানের হিসাবে। কিন্তু বাস্তব অর্থনীতিতে পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকি ক্রমশ বাড়ছে।
শাসনব্যবস্থায় স্বচ্ছতা, প্রকল্প জবাবদিহি, বৈদেশিক ঋণে সতর্কতা এবং বহুমুখী শিল্প উন্নয়ন ছাড়া দেশ সহজেই বহু পোস্ট-এলডিসি দেশের মতো ঋণনির্ভর ভঙ্গুরতার ফাঁদে আটকে যেতে পারে। কাঠামোগত সংস্কার ছাড়া বাংলাদেশ কাগজে গ্র্যাজুয়েট হবে, কিন্তু বাস্তবে পিছিয়ে পড়বে। স্বচ্ছ আর্থিক শাসন, ব্যয় নিয়ন্ত্রণ, প্রকল্প জবাবদিহি এবং কম-কার্বন, বহুমুখী ও সম্প্রদায়-নেতৃত্বাধীন উন্নয়ন ছাড়া দেশ বহু পোস্ট-এলডিসি দেশের মতো ঋণনির্ভর প্রবৃদ্ধির ফাঁদে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি নিচ্ছে। শুধু তাই নয়, সদ্য গৃহীত ‘জুলাই চার্টার’-এ রাজনৈতিক সংস্কার ও শাসনব্যবস্থার পুনর্গঠনের বড় প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু বাস্তবে কোনো সময়বদ্ধ রোডম্যাপ নেই, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের নির্দিষ্ট দায়িত্ব বণ্টন নেই, ব্যাংকিং শুদ্ধীকরণ, দুর্নীতি দমন, প্রকল্প জবাবদিহি ও পরিবেশ সুরক্ষার বাস্তবিক দিকনির্দেশনা নেই, অর্থনৈতিক কাঠামো পুনর্গঠনের কোনো মেট্রিকস বা অগ্রগতি সূচক নেই। ঘোষিত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নযোগ্য না হলে চার্টার কাগজে থাকবে, কিন্তু অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার অগ্রসর হবে না।
যদি সরকার প্রাকৃতিক অধিকারকেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা গ্রহণসহ স্বচ্ছ সংস্কার, প্রকৃত রপ্তানি বৈচিত্র্য, কমিউনিটিকেন্দ্রিক সুরক্ষাব্যবস্থা এবং প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে গ্র্যাজুয়েশন দেশের জন্য ভঙ্গুরতা, ঋণঝুঁকি এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা হ্রাসের কারণ হয়ে উঠবে। এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়, গ্র্যাজুয়েশন কী বাস্তব উন্নয়নে রূপ নেবে, নাকি কাগজে সীমাবদ্ধ থাকবে?
লেখক : প্রধান নির্বাহী, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, চেইঞ্জ ইনিশিয়েটিভ, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক, বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংকগুলোর সমন্বিত আন্তর্জাতিক সংস্থা ক্লাইমেট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড
মেইল : zhkhan@changei.earth