মঙ্গলের ঝড় ও ঘূর্ণায়মান ধুলোর স্তম্ভ ডাস্ট ডেভিল এর ভেতরে বৈদ্যুতিক স্ফুলিঙ্গ (electric spark) শনাক্ত করেছে নাসার পারসিভিয়ারেন্স রোভার। নাসা বলছে, এই আবিষ্কার মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের ধারণায় বড় পরিবর্তন আনবে।
সম্প্রতি প্রকাশিত নেচার জার্নালের একটি গবেষণায় জানানো হয়, পারসিভিয়ারেন্স মোট ৫৫টি পৃথক বৈদ্যুতিক ঘটনা রেকর্ড করেছে। এর মধ্যে ১৬টি ক্ষেত্রে ডাস্ট ডেভিল সরাসরি রোভারের ওপর দিয়ে গেছে। ডাস্ট ডেভিল হলো কয়েক কিলোমিটার উঁচু পর্যন্ত উঠতে পারা ধুলোর ঘূর্ণি, যা উষ্ণ বাতাস ওপরের দিকে উঠতে গিয়ে তৈরি হয়।
নাসা জানিয়েছে, অনেক দিন ধরে ধারণা করা হচ্ছিল যে মঙ্গলের এসব ধুলোর ঝড়ে বৈদ্যুতিক চার্জ তৈরি হতে পারে। কিন্তু এবার অডিও ও ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেকর্ডিংয়ের মাধ্যমে বিষয়টি স্পষ্টভাবে নিশ্চিত করা গেছে। রোভারটির সুপারক্যাম মাইক্রোফোন এসব শব্দ তুলে ধরে।
এই বৈদ্যুতিক স্ফুলিঙ্গ তৈরি হয় ট্রাইবোইলেকট্রিক ইফেক্টে— অর্থাৎ ধুলিকণার ঘর্ষণে চার্জ তৈরি হওয়া। পৃথিবীতে কারও মোজাসহ কার্পেটের ওপর হাঁটার পর ধাতুর দরজার হাতলে হাত দিলে ছোট একটি স্পার্ক লাগে—এটাই ট্রাইবোইলেকট্রিক প্রক্রিয়া। তবে পৃথিবীর ঘন বায়ুমণ্ডলে এ ধরনের চার্জ সচরাচর স্ফুলিঙ্গ তৈরি করে না। মঙ্গলের হালকা (পাতলা) বায়ুমণ্ডলে ছোট চার্জও সহজেই স্পার্কে পরিণত হতে পারে।
নাসার গবেষক রালফ লরেঞ্জ বলেন, কয়েকটি রেকর্ডিংয়ে স্পষ্ট ‘স্ন্যাপ’ শব্দ পাওয়া গেছে। এমনকি কিছু রেকর্ডিংয়ে ধুলোর দেয়াল রোভারের ওপর দিয়ে যাওয়ার শব্দ পর্যন্ত শোনা গেছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মঙ্গলে বৈদ্যুতিক স্ফুলিঙ্গ শনাক্ত হওয়ায় গ্রহটির বায়ুমণ্ডল, জলবায়ু এবং ভবিষ্যতে মানুষের বসতি স্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণায় নতুন পথ খুলে গেল।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল