বিশ্বের বৃহত্তম তুষার মরুভূমি অ্যান্টার্কটিকা। মাইলের পর মাইল শুভ্র বরফে ঢাকা। এই জনশূন্য তুষারাবৃত মহাদেশটিকে নিয়ে বিজ্ঞানীদের কৌতূহলও বেশ। তবে এই বরফের দেশেও আর শান্তি নাই। নতুন কিছু লক্ষ্মণ বিজ্ঞানীদের ভাবিয়ে তুলছে।
নতুন গবেষণায় সেখানেই খানিক বিপদের আঁচ পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, আন্টার্কটিকার খুব গুরুত্বপূর্ণ এক অংশে বরফ প্রায় নেই বললেই চলে। আপাতত তাতে সমস্যা না হলেও আগামী দিনে বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব তীব্র হতে পারে।
অ্যান্টার্কটিকার মেঘ নিয়েও চিন্তিত বিজ্ঞানীদের একাংশ। গবেষণায় দেখা গেছে, এই অঞ্চলের মেঘে বরফকণার পরিমাণ ক্রমশ কমে যাচ্ছে। যে সমস্ত কণা মেঘে বরফ জমাট বাঁধানোর জন্য প্রয়োজন, সেই সমস্ত কণার অভাব দেখা দিয়েছে অ্যান্টার্কটিকার বেশ কিছু অংশে। আগামী দিনে তা ভূখণ্ডটির বাকি অংশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। তার উপরে বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব তৈরি করতে পারে বিপজ্জনক কোনও পরিস্থিতি।
মেঘের ভিতরে বরফের স্ফটিককণা তৈরির জন্য বেশ কিছু সূক্ষ্ম বহিরাগত কণার প্রয়োজন হয়। তার মধ্যে খনিজ ধুলো, বাতাসের সঙ্গে উড়ে আসা মাটি, ছাই থাকতে পারে। থাকতে পারে জীবন্ত কোনও প্রাণীর থেকে আসা প্রোটিন সমৃদ্ধ কণা। এগুলিকে আইস নিউক্লিয়েটিং পার্টিক্ল বা আইএনপি বলা হয়। মেঘ সাধারণত তেমন ঠান্ডা হয় না। কিন্তু আন্টার্কটিকার আকাশে মেঘের মধ্যে বাতাসে ভাসমান এই ধরনের কণার সাহায্যে তৈরি হয় বরফ। আন্টার্কটিকা সংলগ্ন দক্ষিণ সমুদ্রে এই কণার অভাবই ভাবিয়ে তুলেছে বিজ্ঞানীদের।
অ্যান্টার্কটিকার বিভিন্ন অংশ থেকে বাতাসের নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন জার্মানির একদল গবেষক। নমুনা পরীক্ষা করে তারা বিস্মিত। জার্মানির লেইবনিজ ইনস্টিটিউটের গবেষক হেইকে ওয়েক্স বলেন, বহিরাগত কণা বা আইএনপির বাহুল্য হ্রাস পাওয়ার অন্যতম কারণ হতে পারে ওই অঞ্চলে জৈবিক উপাদানের অভাব। বরফের ঘনত্ব সবচেয়ে কম ছিল আন্টার্কটিকার দক্ষিণতম দুইটি স্থানে। আগামী দিনে তা মহাদেশটির বাকি অংশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল