আন্তঃনাক্ষত্রিক বস্তু 3I-ATLAS—কে নাসা একটি স্বাভাবিক ধূমকেতু হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এটা নিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মধ্যে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। কারণ, এর লেজটি ধূমকেতুর সাধারণ লেজের মতো নয়। এর লেজটি দেখা যাচ্ছে সূর্যের দিকে নির্দেশ করা ‘অ্যান্টি-টেল’ আকারে।
হার্ভার্ডের বিশিষ্ট অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট অ্যাভি লোএব মনে করছেন, এই লেজ হয়তো ধূলিকণা বা গ্যাস নয়, বরং কঠিন বস্তুসমূহের একটি ঝাঁক।
লোএব তার সাম্প্রতিক এক ব্লগপোস্টে লিখেছেন, perihelion (সূর্যের সবচেয়ে কাছে আসার পরবর্তী সময়) পর তোলা ছবিতে বস্তুটির কোমা বা উজ্জ্বল আবরণের একটি অদ্ভুত ‘জলবিন্দু আকৃতি’ দেখা গেছে। এর বাড়তি অংশটি প্রায় এক আর্কমিনিট দূর পর্যন্ত সূর্যের দিকে প্রসারিত। একই সময়ে জেপিএল (JPL) রিপোর্টে বস্তুটিতে non-gravitational acceleration—অর্থাৎ মহাকর্ষ ছাড়া অন্য কোনো কারণে ধাক্কা খেতে দেখা যায়।
তার ব্যাখ্যা হলো- যদি 3I-ATLAS-এর চারপাশে এমন কিছু কঠিন বস্তু থাকে, যেগুলো এই অতিরিক্ত ধাক্কার প্রভাব পায় না, তবে সেগুলো স্বাভাবিকভাবেই ধূমকেতুর চেয়ে সূর্যের দিকে একটু কাছাকাছি দেখাবে। এ কারণে লেজটি সূর্যের দিকে প্রসারিত মনে হতে পারে।
লোএব জানান, বর্তমানে 3I-ATLAS সূর্য থেকে প্রায় ২৭ কোটি কিলোমিটার দূরে আছে। এই হিসেবে বস্তুগুলোর অবস্থান প্রায় ৫৪ হাজার কিলোমিটার ভিন্ন দেখা যেতে পারে, যা ছবিতে দেখা লেজের সূর্যমুখী প্রসারণের সঙ্গে মিলে যায়।
তার মতে, এগুলো হতে পারে—শিলাখণ্ড, আন্তঃনাক্ষত্রিক ভ্রমণে তৈরি কোনো গঠন, অথবা সম্পূর্ণ অন্য কিছুও হতে পারে।
নাসা এখনো বলছে, 3I-ATLAS একটি স্বাভাবিক ধূমকেতু। তবে লোএবের বিশ্লেষণ বস্তুটির অস্বাভাবিক আচরণকে আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখার দরজা খুলে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত, প্রশ্নটি থেকেই যাচ্ছে—এই বস্তুসমূহ আসলে কী।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল