জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রদবদল করা হয়েছে। এবার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) রদবদল করা হচ্ছে। দেশের সব জেলায় নতুন এডিসি ও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার নিয়োগের কাজ প্রায় সম্পন্ন। এই দুই পদে প্রায় ৮০ জন কর্মকর্তা মাঠে পাঠানো হচ্ছে। আজকে বা যে কোনো সময় নতুন কর্মকর্তাদের মাঠে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথম ধাপে দেশের ৫০ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর দুই ধাপে প্রায় আড়াই শ ইউএনও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। স্বচ্ছতার কারণে প্রবর্তিত লটারির গোপনীয়তা নিয়েও নানা আলোচনা চলছে কর্মকর্তাদের মধ্যে। নির্বাচনের সময় ডিসিরা রিটার্নিং অফিসার আর ইউএনওরা সহকারী রিটার্নিং অফিসার হয়ে থাকেন। ডিসি-ইউএনও মিলে তিন শতাধিক কর্মকর্তাকে মাঠে পাঠানো হয়েছে। এখন জেলা ও বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যেই এ বিষয়ে বৈঠক করেছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তারা জানান, মাঠে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) পদে ফাঁকা রয়েছে। অনেক জেলায় এডিসির পাঁচটি পদ থাকলেও কর্মরত আছেন দুই থেকে তিনজন। এতে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে রাখা হয়েছে অন্য কর্মকর্তাদের। সূত্র জানায়, নভেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে জেলাগুলোতে এডিসি পদ ফাঁকা রয়েছে ৬৮টি। সবচেয়ে বেশি ফাঁকা খুলনা বিভাগে। খুলনার বিভিন্ন জেলায় ১৮টি এডিসির পদ ফাঁকা। এ ছাড়া ঢাকা বিভাগে ১১ এবং বরিশালে ১০টি এডিসির পদ ফাঁকা রয়েছে। এসব ফাঁকা পদ এবার পূরণ করা হবে। একইভাবে ৮টি বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের কয়েকটিতে সব অতিরিক্ত কমিশনার নেই। একজন আরেক কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। এতে ঠিকমতো সেবা দিতে পারছে না কর্মকর্তারা। যুগ্মসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। বর্তমানে ২২ ও ২৪ ব্যাচের কর্মকর্তারা অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে কর্মরত আছেন। সেখানেও একই ব্যাচের নতুন কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হবে। মাঠ প্রশাসনে কর্মকর্তা নিয়োগ শেষ করে জেলা ও বিভাগীয় অফিসগুলোর জন্য রিজার্ভ ফোর্স নিয়ে কাজ করবে মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যেই বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসি অফিসের বেশির ভাগ কর্মকর্তাদের ইউএনও করায় প্রশাসনে ‘ভারসাম্যহীনতা’ তৈরি হয়েছে। বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসি অফিসে কাজের জন্য সেকশনগুলো ফাঁকা হয়ে গেছে। শূণ্য পদ পূরণ করা না হলে এসব অফিসেও সমস্যা তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সাবেক সচিব ও জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ আবদুল আউয়াল মজুমদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নির্বাচনের আগে বদলি ও পদায়নের সিদ্ধান্ত সব সরকারেরই থাকে। তবে এটি আগে থেকে করলে নতুন কর্মকর্তার জন্য ভালো হয়। একটু দেরিতে শুরু করলেও সমস্যা হবে না।