ভূমিকম্পের জন্য আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের পাশাপাশি অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন। যেখানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে অবস্থিত বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ রকম ৪৪টি ভবন অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে ভেঙে ফেলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল গত বছরের এপ্রিলে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ওই নির্দেশনায় সিলগালা অথবা ভেঙে ফেলার জন্য সাত দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ১৯ মাসেও মাউশির সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হয়নি। এখনো দিব্যি কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে সেসব ভবনে। মাউশির একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মাউশির একাধিক কর্মকর্তা জানান, গত বছরের ৩ এপ্রিল মাউশির এক আদেশে বলা হয় ‘অধিক ঝুঁকিপূর্ণ’ ৪৪টি ভবন সাত দিনের মধ্যে খালি করে সিলগালা করে দিতে হবে অথবা ভেঙে ফেলতে হবে। এরপর অসংখ্যবার চিঠি দেওয়া হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষে অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তি তদবির করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার পথ আটকে দেন। গত এপ্রিলেও সবশেষ আরেক দফায় চিঠি দেওয়া হয়। এসব চিঠিতে কখনো বলা হয়েছিল সাত দিনের মধ্যে ভবন ভাঙতে হবে। আবার কোথাও বলা হয়েছিল দুই সপ্তাহের মধ্যে ভবন ভেঙে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবগত করতে হবে। কিন্তু কেউ ভবনগুলো ভেঙেছে বা কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে বলে কোনো তথ্য আসেনি। শক্তিশালী ভূমিকম্প হওয়ায় আবারও সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চিঠি পাঠানো হবে। অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো হলো- কদমতলীর একেকে উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড ব্রাইট কলেজ, বাড্ডার একেএম রহমাতুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, কদমতলীর কে এম মাইনুদ্দিন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (মিঠাব), আজিমপুরের অগ্রণী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কোতোয়ালি থানার আহমেদ বাওয়ানী একাডেমি, গোড়ানের আলী আহমেদ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পল্টনের আরামবাগ উচ্চ বিদ্যালয়, লালবাগের আনন্দময়ী বালিকা বিদ্যালয়। সূত্রাপুরের কবি নজরুল সরকারি কলেজ, গাজীপুরের কালিগঞ্জ আর আর এন পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়, কেরানীগঞ্জ বালিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, খিলগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকার সায়েদাবাদের করাতিটোলা সিএমএস উচ্চ বিদ্যালয়, নারায়ণগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ, যাত্রাবাড়ীর শহীদ জিয়া বালিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সাভারের ভাকুর্তার শ্যামলনগর স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও তেজগাঁও মডেল উচ্চ বিদ্যালয়। বাড্ডার আলাতুন্নেছা উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সাভারের ভাকুর্তা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, নারায়ণগঞ্জের দেলপাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল, দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, মিরপুর-১ নম্বরের সরকারি বাংলা কলেজ, নারায়ণগঞ্জের সরকারি কদম রসুল কলেজ, গাজীপুরের সরকারি কালিগঞ্জ শ্রমিক কলেজ, ডেমরার হায়দার আলি স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও মিরপুর-১৩ নম্বরের হাজী আলি হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়।