যুক্তরাষ্ট্রে আসতে ট্যুরিস্ট তথা নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসা প্রার্থীগণকে গত ৫ বছরের সোস্যাল মিডিয়া এবং ১০ বছরের ই-মেল ব্যবহারের তথ্য অবহিত করতে হবে। এটা বাধ্যতামূলক এবং তাকে বিধি হিসেবে পরিণত করার পূর্বশর্ত হিসেবে ১০ ডিসেম্বর বুধবার ফেডারেল রেজিস্টারে তা নোটিশ আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।
৬০ দিনের মধ্যে জনমত যাচাইয়ের কাজটি সম্পন্ন হবার ভিত্তিতে তা আইনে পরিণত হবে বলে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক নিরাপত্তার স্বার্থে প্রস্তাবিত বিধিটি আইনে পরিণত হলে তার আওতায় যুক্তরাজ্য, জার্মানি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ ইউরোপের যে ২৯টি দেশের নাগরিকের ভিসা লাগে না, তাদেরকেও দু’বছরের জন্যে ৪০ ডলার ফি দিয়ে ‘ইলেক্ট্রনিক সিস্টেম ফর ট্র্যাভেল অথরাইজেশন’ (ইএসটিএ) সংগ্রহ করতে হবে অনলাইনে। কাস্টমস এ্যান্ড বর্ডার পেট্রলের (সিবিপি) কর্মকর্তারা আরো জানিয়েছেন, সোস্যাল মিডিয়ার গত ৫ বছরের কর্মকান্ড অবাধে দেখা যায় এমন ব্যবস্থা করতে হবে ভিসা প্রার্থীগণকে। এটা বাধ্যতামূলক সকল ট্যুরিস্ট/নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসা প্রার্থীর জন্যে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত ২০ জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্যে ক্ষমতা গ্রহণের দিন থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন এবং সে আলোকে ইতিমধ্যেই বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সর্বশেষ প্রস্তাবিত এই বিধি অনুযায়ী ভিসাপ্রার্থীগণের পরিবারের সকল সদস্যের নাম, জন্ম তারিখ, বসবাসের ঠিকানাও দিতে হবে। সাথে থাকতে হবে গত ১০ বছর ব্যবহারের সকল ই-মেল, আইপি এ্যাড্রেসসহ ডিজিটালে ব্যবহৃত সকল তথ্য।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এইচ-১বি ভিসা প্রার্থীগণকে তাদের ওপর নির্ভরশীল সকলের সোস্যাল মিডিয়ার তথ্য যাচাইয়ের প্রক্রিয়া অবলম্বনের কথা জানানো হয়েছে। আরো উল্লেখ্য, ট্যুরিস্ট/বিজনেস/নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসার ক্ষেত্রে এই কড়াকড়ির ঘটনায় অনেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময়েও বাধাপ্রাপ্ত হয়েছেন। এমনকি ভিসা বাতিল করে বেশ কিছু বিদেশীকে নিজ দেশে ফিরিয়ে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীতির পরিপন্থি মতামত/মন্তব্য কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত কোন রাষ্ট্র বা গোষ্ঠী অথবা রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ততা রয়েছে এমন কাউকে ভিসা দিতে চায় না আমেরিকা।
এদিকে, ৯ ডিসেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান যে, এ বছর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মোট ৮৫ হাজার ভিসা বাতিল করা হয়েছে। আমেরিকার সামাজিক ব্যবস্থাকে সুরক্ষিত রাখা এবং জননিরাপত্তার মান বজায় রাখার জোর প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে এ পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল