এক আদিবাসী নারীর মৃত্যু ঘিরে রণক্ষেত্র ভারতের ওড়িশা রাজ্যের মালকানগিরি জেলার এমভি-২৬ গ্রাম। স্থানীয় এক আদিবাসী নারীর মুণ্ডহীন লাশ উদ্ধার হওয়ার পরই জ্বালিয়ে দেওয়া হলো একটি বাঙালি অধ্যুষিত গ্রাম, অন্তত দেড় শতাধিক বাড়িতে আগুনের ঘটনা হয়েছে বলে অভিযোগ। হামলার হাত থেকে রক্ষা পায়নি দোকান, বাইক, গাড়ি। লুট করা হয়েছে রুপি, স্বর্ণের গহনাসহ মূল্যবান জিনিসও। মারধর করা হয়েছে ওই গ্রামের বাসিন্দাদেরও। নতুন করে হামলা এড়াতে এমভি-২৬ ও পার্শ্ববর্তী এলাকাসহ প্রায় ১০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধ জুড়ে ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’ (বিএনএস)- এর ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত বাহিনী। সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টা ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রশাসনিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে পার্শ্ববর্তী রাখালগুদা গ্রামের বাসিন্দা গোয়া আদিবাসী সম্প্রদায়ের লেক পাদিয়ামি নামে ৫১ বছর বয়সি নারীকে খুন করার সন্দেহে বিক্ষুব্ধ জনতা প্রায় ১৫০টি ঘরে অগ্নিসংযোগ করে।
নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর, গত ৪ ডিসেম্বর স্থানীয় দুদামেত্তা নদীর তীরে তার মুণ্ডবিহীন লাশ উদ্ধার হয়। তাদের সন্দেহ, এই আদিবাসী নারীর মৃত্যুর পেছনে এমভি-২৬ গ্রামের বাংলাভাষী মানুষরাই জড়িত। আর সেই সন্দেহ থেকেই রবিবার তির, ধনুকসহ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এসে আদিবাসী সম্প্রদায় মানুষ এমভি-২৬ গ্রামে এসে হামলা চালায়। সেই সঙ্গে একের পর এক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ঘটানো হয়। এও জানা গেছে, যে দুদামেত্তা নদীর পাড় থেকে পদিয়ামির মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধার হয়, সেই নদীর পাশে সুকুমার মণ্ডল নামে এক বাঙালি কৃষকের জমি আছে। আদিবাসীদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে সুকুমার ও তার পরিবারের সঙ্গে পদিয়ামির বিরোধ চলছিল। জমি বিবাদের জেরেই নাকি পদিয়ামিকে খুন হতে হয়েছে। তবে অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন সুকুমার। মালকানগিরির পুলিশ সুপার (এসপি) বিনোদ পাতিল জানান, খুনের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। আমরা সবাইকে শান্ত থাকার আবেদন করছি। সম্প্রীতি বজায় রাখতে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।