ইন্দোনেশিয়ায় প্রাণঘাতী বন্যা ও ভূমি ধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৯৩-এ পৌঁছেছে। গতকাল দেশটির জাতীয় দুর্যোগ সংস্থা এ তথ্য জানায়। জাকার্তা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, ৪৬৮ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছে। পশ্চিম ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের তিনটি প্রদেশের ৫ লাখ ৭৮ হাজারের বেশি মানুষকে ঘরবাড়ি থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এদিকে সম্প্রতি আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫ লাখের বেশি মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছাতে ও সড়ক-মহাসড়কে থাকা জঞ্জাল পরিষ্কারে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কার উদ্ধারকর্মীরা। ভয়াবহ এ দুর্যোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে এরই মধ্যে ৩৫৫-তে দাঁড়িয়েছে। এখনো নিখোঁজ ৩৬৬ জন। দমকা হাওয়া ও ভারী বৃষ্টি নিয়ে শুক্রবার আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়া দ্বীপদেশটিতে এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা নিয়ে এসেছে, পাহাড়ি মধ্যাঞ্চল দেখেছে বেশ কয়েকটি প্রাণঘাতী ভূমিধস।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের ছবি-ভিডিওতে রাজধানী কলম্বোর কাছে কেলানি নদীর তীরে বন্যায় তলিয়ে যাওয়া বাড়িঘর থেকে জিনিসপত্র বাঁচাতে লোকজনের প্রাণান্ত চেষ্টা দেখা গেছে। বৃষ্টিতে বন্যা ও ভূমিধসের কারণে গত সপ্তাহে ব্যাহত হওয়া রেল যোগাযোগ ও ফ্লাইট ফের চালু হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে, বলেছেন কর্মকর্তারা। এক বিবৃতিতে আবহাওয়া কর্তৃপক্ষ বলেছেন, ‘ঝড়টি সম্ভবত আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হবে, দ্বীপ থেকে সরে যাবে ও আরও দুর্বল হয়ে পড়বে।’ শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুঢ়া কুমারা দেশানায়েকে রবিবার বলেছেন, এবারই প্রথম কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ পুরো শ্রীলঙ্কায় আঘাত হানল। একে দেশের ইতিহাসের ‘সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং’ দুর্যোগ বলেও অভিহিত করেছেন তিনি। ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে ভারতের দক্ষিণের রাজ্য তামিল নাড়ুতেও প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে।
গত কয়েকদিনে সেখানে প্রবল বৃষ্টিতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী কেকেএসএসআর রামাচন্দ্রন জানিয়েছেন। ঝড়টি দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এখন সেটি তামিল নাড়ুর রাজধানী চেন্নাইয়ের উপকূল থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। পরবর্তীতে এটি আরও দুর্বল হয়ে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে, গতকাল এমনটাই বলেছেন ভারতের আবহাওয়া কর্মকর্তারা।