দেশের রপ্তানি আয় ক্রমেই কমছে, স্বাভাবিকভাবেই কমছে রাজস্ব আয়। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার মজুতে ঝুঁকি বাড়ছে। সরকার পরিচালনার অর্থ জোগাতে হাত পাততে হচ্ছে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকসহ ভিনদেশি ঋণদাতা সংস্থার কাছে। দেশীয় ব্যাংকগুলোর কাছ থেকেও ঋণ নিতে হচ্ছে। এ বছরের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় কমেছে ৬ শতাংশের মতো। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৩ কোটি ডলার রপ্তানি কম হয়েছে। গত বছরের নভেম্বরে রপ্তানি হয়েছিল ৪১২ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য। এ বছর ৩৮৯ কোটি ডলার। এ নিয়ে টানা চার মাস রপ্তানি কমল। রপ্তানির শীর্ষ পাঁচ খাতের মধ্যে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য ছাড়া বাকিগুলোর রপ্তানি নভেম্বর মাসে কমেছে। তৈরি পোশাক, পাট ও পাটজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য ও হোম টেক্সটাইল খাতের রপ্তানি কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। চামড়াবিহীন জুতা, হিমায়িত খাদ্য ও প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানিও কমেছে। নভেম্বরে ৩১৪ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। তৈরি পোশাকের পর দ্বিতীয় শীর্ষ রপ্তানি খাত হচ্ছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। গত নভেম্বরে এ খাতের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৯ কোটি ৮৯ মার্কিন ডলার। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ১৪ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরে জুলাই-নভেম্বর পর্যন্ত ৫১ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ। রপ্তানির তৃতীয় খাত কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য রপ্তানিতেও ধস নেমেছে নভেম্বর মাসে। আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে রপ্তানি কমেছে ২৫ শতাংশ। বাংলাদেশি পণ্যের প্রধান রপ্তানি বাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্পের আমলে এ দেশ থেকে বাংলাদেশের আমদানি বেড়েছে। কিন্তু এর বিপরীতে রপ্তানি না বাড়ায় হতাশা সৃষ্টি হচ্ছে বোদ্ধা মহলে। বাংলাদেশের রপ্তানি ক্রমাগতভাবে বেড়েছে গত দেড় যুগে। নোবেল লরিয়েট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের হাল ধরার পর আশা করা হয়েছিল তাঁর বিশ্বজনীন উজ্জ্বল ভাবমূর্তির সুবাদে বাংলাদেশ ব্যবসাবাণিজ্যে বাড়তি সুবিধা পাবে। কিন্তু গত ১৬ মাসে ইউনূসজাদু স্বমূর্তিতে আবির্ভূত না হওয়ায় হতাশা দানা বাঁধছে সব মহলে। রাজনৈতিক সরকারের অপেক্ষায় দেশের মানুষ।