বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস রেমিট্যান্স। বহির্বিশ্বে দেশের ভিন্ন ভাবমূর্তির বদৌলতে সে আয়ের উৎসে হাত পড়তে যাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে অনেকেই নিজেদের ভাগ্য গড়ার চেষ্টা করতেন। সেসব দেশে এখন বাংলাদেশিদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে না বললেই চলে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার মাহাথির মোহাম্মদের দেশ মালয়েশিয়া। সে দেশে বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানি এখন তলানিতে। নোবেল লরিয়েট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেশ থেকে শ্রমিক নিতে তারা অজ্ঞাত কারণে উৎসাহী নয়। সে দেশের শ্রমবাজারে এখন নেপাল ও ইন্দোনেশিয়ার কর্মীদের রমরমা। বাংলাদেশ পশ্চিম মালয়েশিয়ার মূল শ্রমবাজারে গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত পাঠিয়েছে মাত্র ২৯০ জন কর্মী। বিপরীতে নেপাল থেকে গেছে ২১ হাজার এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে প্রায় ২০ হাজার কর্মী। এ অবস্থা চলতে থাকলে নেপাল ও ইন্দোনেশিয়ার কাছে হারাতে হবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শ্রমবাজার। মালয়েশিয়ার মূলত দুই অংশে বাংলাদেশের কর্মীরা কাজের জন্য যান। এর মধ্যে পশ্চিম অংশ অর্থাৎ কুয়ালালামপুর, জোহর, পেনাং, পুত্রজায়ার মতো উন্নত এবং জনবসতিপূর্ণ স্থানগুলোতে কয়েক লাখ কর্মীর চাহিদা ও কর্মসংস্থান হয়। অন্য অংশ পূর্ব মালয়েশিয়ার সাবাহ ও সারওয়াক রাজ্যের বনাঞ্চলে শুধু ‘প্ল্যান্টেশন’ ক্যাটাগরিতে কর্মী নিয়োগ হয়। সাবাহ ও সারওয়াকে এখনো বাংলাদেশিদের পাঠানো হলেও সেখানে পুরো বছরেই চাহিদা মাত্র ৫ হাজারের মতো। মূল মালয়েশিয়ার ৫ লাখ কর্মীর শ্রমবাজার বাংলাদেশের জন্য রয়েছে বন্ধ। চলতি বছর মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশসহ ১৫টি দেশের জন্য শ্রমিক নিয়োগ উন্মুক্ত রাখে। বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগের দায়িত্ব পায় বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট লিমিটেড বোয়েসেল। কিন্তু এ প্রতিষ্ঠানের যথেচ্ছতার কারণে সে দেশে শ্রমিক পাঠানো যাচ্ছে না। ফলে বাংলাদেশের একটি বড় শ্রমবাজার নেপাল ও ইন্দোনেশিয়ার দখলে চলে যাচ্ছে। রেমিট্যান্স আয়ের জন্য যা অশনিসংকেত বলে বিবেচিত হতে পারে।