চলতি বছরের অক্টোবরে অপ্রত্যাশিত পতনের পর নভেম্বরে চীনের রপ্তানি আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে দেশটির বাণিজ্য উদ্বৃত্ত রেকর্ড ১ ট্রিলিয়ন (১ লাখ কোটি) ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
সোমবার (৮ ডেসিম্বর) দেশটির প্রকাশিত কাস্টমস ডেটা অনুযায়ী, নভেম্বরে চীনের সামগ্রিক রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে ৩৩০ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এটি অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাসের চেয়েও ভালো। এর আগের মাস অক্টোবরে রপ্তানি ১ দশমিক ১ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল।
অন্যদিকে নভেম্বরে চীনের আমদানি বেড়েছে মাত্র ১ দশমিক ৯ শতাংশ। ফলে ওই মাসে দেশটির বাণিজ্য উদ্বৃত্ত দাঁড়িয়েছে ১১২ বিলিয়ন ডলার।
ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে উত্তেজনা কমার পরপরই চীনের বাণিজ্য উদ্বৃত্তের এই মাইলফলক অর্জিত হলো। যদিও যুক্তরাষ্ট্রে চীনের রপ্তানি কমে এসেছে। তবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যান্য বাজারে রপ্তানি দ্রুত বেড়েছে। গত অক্টোবরের শেষ দিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনা নেতা শি জিনপিংয়ের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র–চীনের মধ্যে চুক্তি হয়। যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর শুল্ক কমিয়েছে, আর চীন বিরল ধাতুর রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ স্থগিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
আইএনজি ব্যাংকের গ্রেটার চায়নার প্রধান অর্থনীতিবিদ লিন সং বলেন, সম্ভবত নভেম্বরে রপ্তানির পরিসংখ্যানে শুল্ক কমানোর পূর্ণ প্রভাব পড়েনি। আগামী মাসগুলোতে এটির প্রতিফলন দেখা যাবে।
গত অক্টোবরের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর চীনা নেতারা আগামী পাঁচ বছরের জন্য উন্নত উৎপাদনশিল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
উল্লেখ্য, চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একমাত্র ধারাবাহিক চালিকাশক্তি হলো বিদেশি চাহিদা। দেশের অভ্যন্তরে ব্যক্তিগত ভোগব্যয় কমে যাওয়া এবং আবাসন খাতের দীর্ঘস্থায়ী মন্দার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এটি সহায়তা করছে।
তবে চীনের বাণিজ্যের চিত্রটি ক্রমশ ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে। দেশটির অভ্যন্তরীণ দুর্বল চাহিদা ও স্থানীয় কোম্পানিগুলোর উদ্ভাবনী সক্ষমতা বাড়ার ফলে আমদানির চাহিদা কমে যাচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, আগামী বছরগুলোতেও বিশ্ববাজারে চীনের রপ্তানি আধিপত্য বাড়তে থাকবে।
সূত্র: সিএনএন।
বিডি প্রতিদিন/কামাল