জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেছেন, বাংলাদেশের বর্তমান ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত মাত্র ৬ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ, যা অনেক আফ্রিকান উন্নয়নশীল দেশের তুলনায়ও কম। উগান্ডার ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত ১২ দশমিক ৫ শতাংশ।
সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের প্রকাশিত অর্থনৈতিক প্রতিবেদন উন্মোচন অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান এ কথা বলেন। এসময় তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের ট্যাক্স–জিডিপি অনুপাত দীর্ঘদিন ধরেই নিম্নমুখী। কয়েক বছর আগেও এটি ১০ শতাংশের ওপরে ছিল। এখন সেটা ৭ এর আশেপাশে ঘুরছে। এটি আমাদের গুরুত্ব দিয়ে চিহ্নিত করতে হবে।
তিনি জানান, গত এক বছরে এনবিআরের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় রাজস্ব আদায়ে পুরোপুরি ব্যর্থ বলা যাবে না। ১৯৭২ সালে যেখানে রাজস্ব আদায় ছিল ১৬৮ কোটি টাকা, সেখানে গত অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। তবে রাজস্ব বাড়লেও প্রয়োজনীয় স্তরে পৌঁছাতে পারেনি বলে জানান তিনি।
উগান্ডাকে ঘিরে দেশে নানা ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ থাকলেও তাদের ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি- এ বিষয়টি উল্লেখ করে আবদুর রহমান খান বলেন, আমরা কেন পিছিয়ে? ট্যাক্স আদায় গড়ে ১৫ শতাংশ হারে বাড়লেও ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত কমছে। জিডিপির কোন অংশগুলো আমরা সঠিকভাবে ধরতে পারছি না, তা ভাবার সময় এসেছে। অন্যান্য দেশের কাঠামোও আমাদের দেখা উচিত।
অর্থনীতিতে নগদ টাকার প্রবাহ কর আদায়ে বড় বাধা সৃষ্টি করছে বলে উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ক্যাশের চাহিদা কেবল বাড়ছে। এটি কমাতে হবে। সমাধান হিসেবে তিনি তিনটি দিক তুলে ধরেন- টাকা ছাপানো কমানো, সর্বত্র ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা, নগদ উত্তোলন বা লেনদেনে অতিরিক্ত কর আরোপ। তার মতে, নগদ লেনদেন কমাতে পারলে কর আদায়ে বড় ধরনের অগ্রগতি সম্ভব।
এনবিআরের রাজস্ব নীতি (পলিসি) বিভাগ ও কর ব্যবস্থাপনা বিভাগকে পৃথক করার প্রক্রিয়া দ্রুত এগোচ্ছে বলেও জানান চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, আইনি প্রক্রিয়ার প্রায় সবই সম্পন্ন। এখন বাস্তবায়নের দিকে দ্রুত এগোচ্ছি। অ্যালোকেশন অব বিজনেস ও রুলস অব বিজনেস প্রায় চূড়ান্ত। নতুন দুই বিভাগের অর্গানোগ্রামও প্রায় চূড়ান্ত।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, চলতি অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই দুই বিভাগে দুইজন সচিব নিয়োগ দেয়া যাবে। এনবিআরের অভ্যন্তরীণ সংস্কার, আধুনিক কর ব্যবস্থাপনা ও ট্যাক্স–জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর লক্ষ্যে বিভাগ আলাদা করার এ উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ