গভীর নলকূপের কারণে নদীবেষ্টিত বরিশাল নগরীর ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমশই নিচে নামছে। ১০ বছর পূর্বে নগরীতে গভীর নলকূপ স্থাপন না করার কোনো নির্দেশনা মানছেন না বাসিন্দারা। নগরীতে চাহিদার তুলনায় সিটি করপোরেশন মাত্র ৪৫ ভাগ পানি সরবরাহ করতে পারে।
যার কারণে বাধ্য হয়ে নগরবাসী গভীর নলকূপ স্থাপন করছে। যার কারণে ভূমিধস নানা সমস্যায় পড়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বরিশাল জনস্বাস্থ্য দপ্তরের সিনিয়র কেমিস্ট মো. সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, বরিশালের গ্রাম এলাকায় ২০ ফুট গভীরে পানি পাওয়া যায়। সেখানে নগরীতে এখন ৪০-৪২ ফুট গভীরে পানি পাওয়া যাচ্ছে। এর কারণ হলো যথেচ্ছভাবে গভীর নলকূপ স্থাপন করে সাব-মার্সিবল ব্যবহারের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করা। এর কারণে ভূগর্ভের ফাঁকা স্থান তৈরি হচ্ছে। এতে ভূমিধস হতে পারে। এ ছাড়াও সমুদ্রের কাছে লবণাক্ত পানি এসে ফাঁকা স্থান পূরণ করতে পারে। এতে লবণাক্ত পানি ভূপৃষ্ঠের ওপরে উঠে যাবে।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ছয় লাখ নগরবাসীর প্রতিদিনের চাহিদা প্রায় সাড়ে ৫ কোটি লিটার। কিন্তু সরবরাহ করা হচ্ছে মাত্র ৪৫ শতাংশ পানি। বাকি জনসাধারণ গভীর নলকূপের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করছে।
ট্রিটমেন্ট প্লান্ট চালুর মাধ্যমে পানি সংকট সমাধানের চেষ্টা চলছে
ওমর ফারুক
নির্বাহী প্রকৌশলী, বরিশাল সিটি করপোরেশনের পানি শাখা
নগরবাসী জানিয়েছেন, কীর্তনখোলা নদীর পানি বিশুদ্ধ করে নগরবাসীর মাঝে সরবরাহের জন্য এক যুগ পূর্বে ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর বেলতলায় ও ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর রূপাতলীতে দুটি সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এখনো ওই ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট দুটি চালু করা যায়নি। এ দুটি চালু করলে দৈনিক ৩ কোটি ২০ লাখ লিটার পানি সরবরাহ হতো। এতে ভূগর্ভস্থ পানি উঠানোর চাপ কমত।
২০১৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে সিটি করপোরেশন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নগরীতে গভীর নলকূপ স্থাপনের নিষেধ করে নোটিস প্রচার করেছিল। এ নিষেধ নগরীতে কেউ মানে না। নগরীতে নতুন নতুন ভবনের সঙ্গে একটি করে গভীর নলকূপ স্থাপন করা হচ্ছে। বর্তমানে বরিশাল নগরীর ১০ হাজারের অধিক গভীর নলকূপ রয়েছে। এসব নলকূপ সাব-মার্সিবল দিয়ে পানি উত্তোলন করা হচ্ছে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের পানি শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী ওমর ফারুক বলেন, ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট চালুর মাধ্যমে পানি সংকট সমাধানের চেষ্টা চলছে।