গত বছর ৭ ডিসেম্বর রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে প্রবল শৈত্য প্রবাহ বয়ে গিয়েছিল। এ বছর শীত ঢুকছে ধীরগতিতে। ডিসেম্বরের প্রথম দশক পার হলেও শীতের তীব্রতা তেমন দেখা যায়নি। তবে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ডিসেম্বরেই শীত তার প্রকৃত রূপে ফিরে আসবে।
এদিকে, শীতের আগাম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে প্রতি বছর ত্রাণ অফিস শীতবস্ত্রের চাহিদা পাঠাত। এ বছর শীতবস্ত্রের পরিবর্তে প্রতিটি উপজেলায় শীতবস্ত্র কেনার জন্য ৬ লাখ টাকা পাঠানো হয়েছে। ওই টাকা দিয়ে উপজেলা প্রশাসন স্থানীয়ভাবে শীতবস্ত্র কিনে অসহায় ও শীতার্তদের মাঝে বিতরণ করবে।
রংপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর শীত দেরিতে এসেছে তিনটি কারণে- হিমালয় থেকে হিমেল বাতাস না আসা, বৃষ্টি না হওয়া ও আকাশ মেঘাচ্ছন্ন না থাকা।
প্রতিবছর নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে এই অঞ্চলে শীতের প্রকোপ দেখা যায়। তবে এবার নভেম্বরে শীতের তেমন উপস্থিতি দেখা যায়নি। গত বছর ৭ ডিসেম্বর শৈত্য প্রবাহ বয়ে গিয়েছিল। এবছর ডিসেম্বরের প্রথম ১০ দিনে শীত তেমন তেজ ধরে রাখতে পারেনি। বুধবার সকাল ৬টায় রংপুর ও আশপাশের এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একদিন আগে মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি। দিনের বেলা ঝলমলে সূর্যের আলোর কারণে শীতের অনুভূতি কম, তবে রাতে তাপমাত্রা ১২-১৩ ডিগ্রি পর্যন্ত নেমে যাওয়ায় শীত অনুভূত হয়।
আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী সপ্তাহে এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদ্যু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যেতে পারে, যা পরে মাঝারি শৈত্য প্রবাহে পরিণত হতে পারে।
এদিকে, শীতার্তদের কষ্ট লাঘবে স্থানীয় প্রশাসন প্রতিটি উপজেলায় শীতবস্ত্র কেনার জন্য ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ করেছে। জেলা ত্রাণ অফিস থেকে জানানো হয়েছে, উপজেলা প্রশাসন ওই অর্থ দিয়ে স্থানীয়ভাবে শীতবস্ত্র ক্রয় ও বিতরণ করবে। তবে স্থানীয়ভাবে কেনা শীতবস্ত্রের মান ও বিতরণের ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে সংশয় প্রকাশ করছেন অনেকে।
পরিবেশবিদরা বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে শীত ও গরম উভয়ই তীব্র হয়ে উঠছে। শীতার্তরা বিশেষ করে গ্রামাঞ্চল ও চর এলাকায় শীতবস্ত্রের অভাবে ভোগান্তিতে পড়েন।
রংপুর আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, এবার শীত দেরিতে এসেছে। তবে আগামী সপ্তাহে মৃদ্যু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যেতে পারে। হিমালয়ের হাওয়া না আসা, বৃষ্টি না হওয়া ও আকাশ মেঘাচ্ছন্ন না থাকার কারণে শীত দেরিতে এসেছে।
রংপুর জেলা ত্রাণ অফিসার গোলাম কিবরিয়া বলেন, শীতবস্ত্র কেনার জন্য প্রতিটি উপজেলায় ৬ লাখ টাকা পাঠানো হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ওই টাকা দিয়ে শীতবস্ত্র ক্রয় করে শীতার্ত মানুষের মধ্যে বিতরণ করবে।
বিডি-প্রতিদিন/মাইনুল