শীতের শুরুতে আগাম আলু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন মানিকগঞ্জের কৃষকরা। গত বছরের লোকসান পুষিয়ে নিতে লাভের আশায় আগাম আলু চাষে ঝুঁকছেন তারা। অনেক ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদেরও চাষের কাজে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে। জমিতে লাঙ্গল দেওয়া, আগাছা পরিষ্কার ও বীজ বপনের কাজ চলছে জোরেশোরে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় একই ধরনের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।
কৃষকরা জানান, আকারে বড় ও ভালো স্বাদের জন্য তারা ডায়মন্ড, ভ্যানালা, গ্র্যানুলা, কারেজ ও জামপ্লাস জাতের আলু রোপণ করছেন।
সাটুরিয়ায় চাষি আবদেল জানান, গত বছর আলু চাষে বড় ধরনের লোকসান হয়েছে। তাই এবার আগাম আলু বেছে নিয়েছেন। তার হিসাব অনুযায়ী প্রতি বিঘায় ১৫-১৬ হাজার টাকা খরচ হয়। ফলন ভালো হলে ৫০-৬০ হাজার টাকার আলু বিক্রি সম্ভব। তিনি বলেন, বাজারে যদি এখনকার মতো ৬০-৭০ টাকা কেজি দাম থাকে, তবে গতবারের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যাবে।
ঘিওরের চাষি সফর উদ্দিন বলেন, গত বছর লোকসানের পরও নতুন আশায় আলু চাষ করছেন। জমি আলু উৎপাদনের জন্য উপযোগী। তবে ফলন ও বাজার ভালো না হলে ভবিষ্যতে আলু চাষ বন্ধ করার কথা ভাবছেন তিনি।
এদিকে সার সংকটের অভিযোগ তুলেছেন কৃষকরা। তাদের দাবি, নির্ধারিত দামে প্রয়োজনীয় সার পাওয়া যাচ্ছে না। ডিলারদের কাছে গেলে বলে, সার নেই। কিন্তু বেশি দাম দিলে সার পাওয়া যায়। আবার খোলা বাজারেও বেশি দামে সার কিনতে পাওয়া যায়। এ অবস্থায় চাষ করতে তারা বেশি দাম দিয়েই সার সংগ্রহ করছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, গত মৌসুমে ব্যাপক লোকসানের কারণে কৃষকদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। তবে এবার তাদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আলুর পাশাপাশি মুলা, বাঁধাকপি, ফুলকপি প্রভৃতি সবজি চাষ বাড়ছে। এসব সবজিতে কৃষকরা তুলনামূলক ভালো দাম পাচ্ছেন।
মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ শাহজাহান সিরাজ বলেন, জেলার সব উপজেলায় আগাম আলু রোপণ করা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই বাজারে নতুন আলু আসবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফলন ভালো হবে।
তিনি আরও জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ৪ হাজার ৯১৩ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ৯৯ হেক্টর বেশি। এর মধ্যে প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষ হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। এবার ভালো ফলনের আশা করা হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/এমই