অনেক দিন ধরে বাড়িতে লুকিয়ে রাখা অর্থ এখন ব্যাংকে জমা দেওয়ার কারণে কোটিপতি ব্যাংক হিসাবধারীর সংখ্যা বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। গতকাল সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ মন্তব্য করেন। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি হতে পারে অনেকে অনেক দিন ধরে বাড়িতে টাকাপয়সা লুকিয়ে-টুকিয়ে রাখছিলেন। তারা এখন সেসব অর্থ ব্যাংকে জমা দিচ্ছেন।’ বৈঠকে রেকর্ডসংখ্যক ২৫টি দরপ্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে চাল, ডাল, তেল, সার, বই ছাপানো, সোলার প্যানেল স্থাপনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব রয়েছে। বৈঠকে চাল, ডিএপি সার, ইউরিয়া সার ও এমওপি সারের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার জানা মতে এ বছর ফসল ভালো হয়েছে। তবে বাজার পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নির্ভর করবে ব্যবসায়ী ও সরবরাহব্যবস্থার ওপর।’ রমজান সামনে রেখে মসুর ডাল আমদানি ও সরবরাহ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খেজুর আমদানির বিষয়েও দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়। বৈঠকে দুটি বড় সড়ক প্রকল্পের পাশাপাশি হবিগঞ্জে একটি উড়ালসড়ক নির্মাণের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে দ্রুত অগ্রগতি আনতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১২টি সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার উৎপাদনসক্ষমতা ৯১৮ মেগাওয়াট।
এসব প্রকল্পে আগের তুলনায় প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টায় ২ থেকে ৩ সেন্ট কম দামে বিদ্যুৎ কেনা সম্ভব হবে। এর ফলে বছরে প্রায় ৪২০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা বলেন, ‘এলএনজি আমদানি ব্যয়বহুল। ধাপে ধাপে সৌরবিদ্যুৎ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়াতে হবে।’
জানুয়ারির মধ্যেই অধিকাংশ বই সরবরাহ সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়। তবে এক-দুটি শ্রেণির বই পেতে সামান্য দেরি হতে পারে।
মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘শুধু সুদের হার বাড়ালেই মূল্যস্ফীতি কমে না। পণ্যের সরবরাহই এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অনেক ক্ষেত্রে খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ী এবং আমদানিকারকদের কারণে বাজারে অস্বাভাবিক দাম বাড়ছে। ডেটা ম্যানিপুলেশন ও বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা মূল্যস্ফীতির অন্যতম কারণ।’