গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ও নির্বাচনি আচরণবিধির সাম্প্রতিক সংশোধনীগুলোকে ‘অগণতান্ত্রিক’ আখ্যায়িত করে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। একই সঙ্গে শুধু একক প্রার্থীর ক্ষেত্রে নয়, সব আসনেই ‘না’ ভোটের দাবি জানিয়ে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন জোটের নেতারা। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বরাবর স্মারকলিপি দিয়ে জোটের পক্ষ থেকে এসব দাবি জানানো হয়। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ সিইসির পক্ষে এ স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। উল্লেখ্য, এদিন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সিইসিকে স্মারকলিপি দিতে নির্বাচন কমিশনে যান।
সিইসি বরাবর বাম গণতান্ত্রিক জোটের দাবিগুলো হচ্ছে জামানত ও নির্বাচনি ব্যয় বৃদ্ধিসহ আরপিওর অগণতান্ত্রিক ধারা বাতিল, সবার ভোট দেওয়া ও প্রার্থী হওয়ার সমানাধিকার নিশ্চিত করা, জামানত ৫ হাজার টাকা; নির্বাচনি ব্যয় ৫ লাখ টাকায় নির্ধারণ; কালো টাকা, পেশি শক্তি, সাম্প্রদায়িক ও প্রশাসনিক কারসাজিমুক্ত নির্বাচনের নিশ্চয়তা বিধান; নির্বাচনে পোস্টার, লিফলেট, প্রার্থীদের পরিচিতি সভাসহ নির্বাচনি ব্যয় কমিশনকে বহন; শুধু একক প্রার্থীর ক্ষেত্রে নয়, সব আসনেই ‘না’ ভোটের বিধান যুক্ত করা, আইসিটি আদালতে অভিযুক্ত হলেই প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য ঘোষণার মতো অগণতান্ত্রিক ধারা বাতিল করা, নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের জন্য অপেক্ষা না করে সুয়োমটো হিসেবে কমিশনকে আচরণবিধি লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে দৃশ্যমান শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ, ভোটারদের প্রতিনিধি প্রত্যাহারের বিধান যুক্ত করা; উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা পদত্যাগের কমপক্ষে তিন বছরের মধ্যে নির্বাচন করতে পারবেন না এমন বিধান যুক্ত করা, নির্বাচনি এলাকার শিক্ষক-কর্মকর্তাদের একই এলাকায় পুলিং, প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ না দিয়ে অন্য এলাকায় নিয়োগ; ডিসি-ইউএনওদের পরিবর্তে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ প্রদান, তফসিল ঘোষণা থেকে নির্বাচনে ভোট দান, ফল ঘোষণা এবং গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র, তথ্য, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচনের কাজে নিয়োজিতদের কমিশনের অধীনে রাখা এবং যুদ্ধাপরাধী ও সাম্প্রদায়িক বক্তব্য ও উসকানি সৃষ্টিকারীকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা। এদিকে, সিইসিকে স্মারকলিপি দেওয়ার আগে নির্বাচন ভবনের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, রাজনৈতিক দল, বিশেষজ্ঞ, সুশীল সমাজ কিংবা জনগণের মতামত না নিয়েই জামানত বৃদ্ধি, নির্বাচনি ব্যয় সীমা বাড়ানো, ‘না’ ভোট সীমিত করাসহ বিভিন্ন সংশোধনী আনা হয়েছে। এসব সংশোধনী দেশের সাধারণ মানুষের প্রার্থী হওয়ার অধিকারকে সীমিত করেছে।