শিক্ষকসংকটসহ নানান সমস্যায় জর্জরিত দিনাজপুরের কাহারোল সরকারি কলেজ। প্রতিষ্ঠার ৪১ বছরেও চালু হয়নি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। গড়ে তোলা হয়নি তেমন কোনো অবকাঠামো। দীর্ঘদিন ধরে কলেজটিতে এ অবস্থা চলছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদানসহ শিক্ষা কার্যক্রম। উচ্চশিক্ষা বঞ্চিত এ এলাকার হাজার হাজার শিক্ষার্থী।
সংশ্লিষ্টরা জানান, কাহারোল উপজেলাসহ এ অঞ্চলে উচ্চশিক্ষা বিস্তারে ১৯৮৪ সালে স্থাপন করা হয় এ কলেজ। কাহারোল উপজেলা সদর থেকে দিনাজপুরমুখী সড়ক সংলগ্ন রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর মৌজায় এর অবস্থান। ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে কলেজটি জাতীয়করণ করা হয়। তবে এর পর থেকে এ কলেজে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ কলেজে ১ হাজার ৭০৮ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। এ প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ, বাংলা, ইসলামের ইতিহাস, পৌরনীতি, সাধারণ ইতিহাস, অর্থনীতি, সমাজ বিজ্ঞান, উচ্চতর গণিত বিভাগে প্রভাষকের পদ শূন্য রয়েছে।
কলেজের শিক্ষার্থী মোছা. মুক্তা আক্তার বলেন, বেশির ভাগ বিষয়ে শিক্ষক নেই। কোনো দিন ক্লাস হয়, আর কোনো দিন হয় না। অধিকাংশ সময় বাইরে প্রাইভেট ও কোচিংয়ের ওপর নির্ভর করতে হয়।
ডিগ্রি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. হারুন অর রশিদ জানান, এইচএসসি পাস করার পর ইচ্ছা ছিল অনার্স পড়ব। বাবা-মায়ের আর্থিক অবস্থা খারাপ, এ কারণে বাইরে পড়াতে পারবে না। বাধ্য হয়ে এখানে ডিগ্রিতে ভর্তি হতে হয়েছে। এখানে অনার্স বা মাস্টার্স চালু থাকলে আমার মতো অনেক গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীর উপকার হতো। এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. আবদুল মালেক মিঞা বলেন, কাহারোল সরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স চালু হয়নি। আমরা চাই দ্রুত এ কলেজে উচ্চশিক্ষার সুযোগ করে দেওয়া হোক।
কাহারোল সরকারি কলেজের (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ বিকাশ চন্দ্র রায় বলেন, কলেজে নিয়মিত ও অনিয়মিত মিলে ১ হাজার ৭০৮ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করে। নিয়ম অনুযায়ী ৪২ জন প্রভাষকসহ জনবল থাকার কথা। আছে মাত্র প্রভাষকসহ ২৪ জন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কলেজের পক্ষ থেকে প্রভাষকের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। এখনো প্রভাষক না দেওয়ায় খণ্ডকালীন কিছু শিক্ষক দিয়ে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, যেহেতু প্রভাষক নেই, তাই স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করার সুযোগ নেই। যখন সরকার পর্যাপ্ত প্রভাষক নিয়োগ দেবে তখন এসব চালু করা সম্ভব হবে।