বেকারত্ব দূর ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কাজ করা ফ্রিলান্সিং ও আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠান ‘ই–লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেড’ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা আনতে যাওয়ার অভিযোগে জাহাঙ্গীর আলম নামের এক ভুয়া সাংবাদিককে আটক করেছে পুলিশ। জাহাঙ্গীর সক্রীয় একটি চাঁদাবাজ চক্রের অন্যতম সদস্য।
গত সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর কল্যাণপুরে প্রতিষ্ঠানটির একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন মোবাইল থেকে প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সাংবাদিক পরিচয়ে ফোন করে চাঁদা দাবি ও হুমকি প্রদর্শন করে। বলা হয়, প্রতি মাসে তাদেরকে চাঁদা দিতে হবে— অন্যথায় মিথ্যা অভিযোগ সাজিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ণ করবে।
এমন ঘটনায় ওই চাদাঁবাজ চক্রের সদস্যদের সাথে প্রতিষ্ঠানটি কৌশলগতভাবে চক্রের একজন সদস্যকে ‘সেটেলমেন্ট আলোচনার’ নাম করে অফিসে আমন্ত্রণ জানায়। সেই সূত্র ধরে মো. জাহাঙ্গীর আলম আলোচনার জন্য অফিসে উপস্থিত হলে, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী পুলিশকে খবর দেওয়া হয় এবং তাকে ঘটনাস্থলেই গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারক চক্রের ওই সদস্য স্বীকারোক্তি দিয়ে বলেন, নিজেদের বানানো ফেসবুক পেইজ ও অনুমোদনহীন অনলাইন ওয়েব সাইট বানিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন কোম্পানি এবং সরকারি কর্মকর্তাদের ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয় তারা। প্রথমে তারা আওয়ামী লীগের ট্যাগ ও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের দমন কাজে জড়িত আছে বলে হুমকি দেয়। পরে আপোসের প্রস্তাব দিলে তারা নিজেদের নিয়ন্ত্রিত জায়গায় নিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।
একই পন্থায় চক্রটি ই–লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেড–এর অফিসে ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এঘটনায় আটক জাহাঙ্গীর আলমের তথ্যমতে দারুস সালাম থানায় চক্রের ৮ জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাত নাম রেখে অভিযোগ দায়ের করেন প্রতিষ্ঠানের হিসাব রক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম। এই চক্রের পলাতক বাকি সদস্যরা হলেন মো. জাহাঙ্গীর আলম, মো. মেছ মাউল আলম মোহন, খাদিজা আক্তার পূর্ণী, এস এম মোরশেদ, আব্দুর রহমান সজীব, রূপক ও মীর আনিস।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দারুসসালাম থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, আটককৃত আসামির স্বীকারোক্তিতে সত্যতা পাওয়ায় তাকে আটক করা হয়েছে। বাকি পলাতক সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং চক্রটিকে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
ই–লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেড–এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে ভয়ভীতি, ব্ল্যাকমেইল ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে অর্থ আদায়ের এ ধরনের ঘটনা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারণার অংশ। আমরা আইনের প্রতি সম্পূর্ণ আস্থাশীল এবং এই চক্রের সকল সদস্যকে আইনের আওতায় আনা হবে।