নারী শিক্ষা ও জাগরণের অগ্রদূত হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে সমাদৃত বেগম রোকেয়াকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক খন্দকার মো. মাহমুদুল হাসান। আজ মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তিনি একটি পোস্ট শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখেন, ‘মুরতাদ কাফির বেগম রোকেয়ার জন্মদিন আজ।’
তার এমন মন্তব্যের পরই সমালোচনার ঝড় ওঠে। সমালোচকরা বলছেন, একজন শিক্ষক হিসেবে তার বক্তব্য উগ্রতার বহিঃপ্রকাশ।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ফুয়াদ রাতুল বলেন, এ অঞ্চলের নারীদের মধ্যে শিক্ষার বিস্তার ঘটাতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। আধুনিক বিশ্বে নারীদের পিছিয়ে রেখে কোন জাতিই উন্নতি করতে পারে না। বেগম রোকেয়ার সেই নারী জাগরণের বিষয়গুলো ছোট থেকে আমরা পড়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে তিনি বেগম রোকেয়াকে যেভাবে ট্যাগিং করলেন, সেটা খুবই দুঃখজনক বলে মনে করেন তিনি।
রাকসু বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক ইমরান লস্কর বলেন, বেগম রোকেয়াকে যতটুকু জেনেছি, যতটুকু পড়েছি; তার লেখার মাঝে সংস্কারমুখী একটা চিন্তা ছিল। তৎকালীন আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখে ‘ধর্ম ও পুরুষশাসিত সমাজের’ অনেক উপাদানকে নারী জাগরণের অন্তরায় হিসেবে অনেক রচনায় তিনি উল্লেখ করেছেন। এটা একান্তই রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের চিন্তা। এই সংস্কারধর্মী চিন্তা যদি ইসলাম ধর্মের মৌলিক বিধানগুলোর সাথে সাংঘর্ষিক ও বিপরীতধর্মী হয় তবে, কেউ যদি ধর্মের আইন আরোপ করে কাফের বা মুরতাদে আখ্যায়িত করে, সে ব্যাখ্যা একান্তই তার। ওই শিক্ষক যে মন্তব্য করেছেন তা যেহেতু ধর্মীয় ব্যাখ্যার সাথে জড়িত, ফলে তা একজন স্কলারের ব্যাখ্যা নেয়া দরকার আছে। প্রত্যেকের নিজ নিজ বিশ্বাসে ভিন্নতা আছে, বিরোধিতা আছে। ধর্মীয় বিশ্বাসযুক্ত জনগোষ্ঠী ও সমাজে ধর্মকে অবশ্যই প্রাধান্য দিতে হবে।
জানতে চাইলে ড. মাহমুদুল হাসান বলেন, এরকম মন্তব্য আগেও বহুজন করেছে। আজকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হয়ে এমন মন্তব্য করায় হয়তো সমালোচনা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে মাহমুদুল হাসান ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে লেকচারার হিসেবে যোগ দেন। পরবর্তীতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়েও শিক্ষকতা করেন। ২০১৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে যোগদান করেন।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল