বাংলাদেশে ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি) বা দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসীয় ব্যাধি বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রুত। ধূমপান, বায়ুদূষণ ও বাড়ির ভেতরে বিভিন্ন উৎস থেকে সৃষ্ট ধোঁয়া (ইনডোর স্মোক) এটার প্রধান ঝুঁকি। এটা একটি গুচ্ছ রোগ যা ক্রনিক ব্রংকাইটিস, এমফাইসিমা ও ক্রনিক অ্যাজমার যেকোনো একটি, দুটি বা তিনটির সহাবস্থান। রোগটিকে একসঙ্গে বলে সিওপিডি। হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের পর পৃথিবীব্যাপী এটি মৃত্যুর তৃতীয় কারণ। বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রায় ১২ দশমিক ৫ ভাগ লোক সিওপিডিতে ভুগছেন, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ২ কোটি।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) শহীদ ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় চিকিৎসকরা এসব কথা বলেন। ‘সিওপিডি : জনস্বাস্থ্যের গোপন সংকট’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএমইউর বক্ষব্যাধি (রেসপিরেটরি) বিভাগ।
সভায় বক্তব্য দেন বিএমইউর উপাচার্য ডা. শাহিনুল আলম, চেস্ট এন্ড হার্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, বিএমইউর উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) আবুল কালাম আজাদ, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) মুজিবুর রহমান হাওলাদার, রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান শামীম আহমেদ, ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল কাদের, কাজী মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, এনআইডিসিএইচের পরিচালক দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।
শাহিনুল আলম বলেন, সিওপিডি প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। সিওপিডি প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় গাইডলাইন ও নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। সিওপিডি নিয়ে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করা প্রয়োজন। গবেষণার ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, জনগণ ও রোগীদের প্রয়োজন এবং কল্যাণে কাজে আসে সে ধরনের গবেষণায় দৃষ্টি দিতে হবে।
জহিরুল ইসলাম শাকিল বলেন, সিওপিডি প্রতিরোধে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে। সম্মিলিতভাবে কাজ করলে সিওপিডি প্রতিরোধ করা সম্ভব। একই সাথে গবেষণা কার্যক্রমকেও গুরুত্ব দিতে হবে। মনে রাখতে হবে সিওপিডি প্রতিরোধযোগ্য। সিওপিডি প্রতিরোধই সবচেয়ে বড় শক্তি। একসাথে কাজ করলে আমরা এই রোগের বোঝা প্রায় অর্ধেক পর্যন্ত কমাতে পারব।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, সিওপিডি প্রতিরোধে ধূমপান পরিহার, বায়ুদূষণ হ্রাস করাসহ সকল ঝুঁকিসমূহ মোকাবিলায় গুরুত্ব দিয়ে সমন্বিত ও জাতীয় পর্যায়ে কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। গ্রামে রান্নার চুলা ব্যবহারের সঠিক নিয়ম মায়েদের অবহিত করতে হবে। সিওপিডির রোগীরা যাতে গাইডলাইনভিত্তিক যথাযথ চিকিৎসা পায়, সেদিকেও দৃষ্টি দিতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই