রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও উপস্থাপক জিল্লুর রহমান বলেছেন, গত নভেম্বর মাসের কয়েকটা খবর একসঙ্গে সাজিয়ে রাখলে বাংলাদেশের বর্তমান চিত্রটা ভয়াবহভাবে স্পষ্ট হয়। মানবাধিকার সংগঠন এইচআরএসএস বলছে- এক মাসেই অর্থাৎ নভেম্বর মাসেই অন্তত ৯৬টি রাজনৈতিক সহিংসতায় ১২ জন নিহত, আহত ৮৭৪ জন, ২০টি গণপিটুনি ও মব সহিংসতায় মারা গেছে ১৬ জন মানুষ। আহত আরও অনেকেই। একই সময় ১৭৭ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। অন্তত ৪৮ জন ধর্ষিত, যার অনেকেই শিশু-কিশোরী।
সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলের এক ভিডিওতে তিনি এসব কথা বলেন। জিল্লুর রহমান বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে এই সহিংসতাকে যদি শুধু নির্বাচনী উত্তাপ বলা হয়, সেটা হবে বাস্তবতাকে আড়াল করার খুবই সুবিধাজনক একটা চেষ্টা। আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর অনেকে ভেবেছিলেন, বাংলাদেশ যেন দ্বিতীয়বারের মতো একটি স্বাধীনতার দরজায় দাঁড়িয়েছে। ভাবনাটা ছিল রাষ্ট্র হয়তো এবার সত্যিকার অর্থে নাগরিকের। রাজনীতি হয়তো কিছুটা হলেও নীতি-নৈতিকতায় ফিরে যাবে। কিন্তু নভেম্বরের পরিসংখ্যান অন্য কথা বলছে।
জিল্লুর বলেন, পুলিশের অস্ত্র লুট হয়ে বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে লক্ষ্য করে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি। আবার পুরনো কায়দায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে হাজার হাজার গ্রেপ্তার। তার মধ্যেই নতুন নতুন জোট, আসন সমঝোতা, প্রতীকের অঙ্ক কষা। সব মিলে মনে হয় রাষ্ট্র বদলেছে; কিন্তু ক্ষমতার ভাষা তেমন বদলায়নি। এইচআরএসএসের এসএস ও অন্যান্য উৎসের তথ্য বলছে, গত দেড় বছরে রাজনৈতিক সহিংসতায় কয়েক শ মানুষ খুন হয়েছে। মাসে গড়ে একাধিক রাজনৈতিক কর্মী হত্যার শিকার।
তিনি বলেন, যারা মারা যাচ্ছে তারা ক্ষমতাসীন, বিরোধী নাকি মাঝামাঝি? এই হিসাব আমাদের অভ্যস্ত চোখে হয়তো শান্ত করে। কিন্তু নিহতের পরিবারগুলোর কাছে এই ট্যাগের কোনও অর্থ নেই।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ