বরিশালে বাসায় ঢুকে সাংবাদিককে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছেন এক পুলিশ সদস্য। ঢাকার সাভারে সেটেলমেন্ট কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলার খবর পাওয়া গেছে। কুড়িগ্রামে প্রেস ক্লাবে ঢুকে সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
বরিশাল : মহানগরের গোরাচাঁদ দাস রোডের আল জামিয়া মাদ্রাসা ভবনের দ্বিতীয় তলায় ভাড়া বাসায় ঢুকে ফিরোজ মোস্তফা নামে এক সাংবাদিককে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছেন নাভিদ আনজুম নামে পুলিশের এক কনস্টেবল। সোমবার রাতের এ ঘটনায় আমানতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত নাভিদকে হেফাজতে নিয়েছে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। এশিয়ান টিভির বরিশাল ব্যুরোপ্রধান ফিরোজ মোস্তফাকে ভর্তি করা হয়েছে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
আহত সাংবাদিক ফিরোজ মোস্তাফা জানান, সোমবার রাতে কনস্টেবল নাভিদ বাসায় ঢুকে হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে রক্তাক্ত করেন। তাঁকে রুমে আটকে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে পালিয়ে যান নাভিদ। নিজেকে বাঁচাতে ৯৯৯-এ ফোন করলে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন উল ইসলাম বলেন, ‘৯৯৯-এ খবর পেয়ে ওই সাংবাদিককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমি নতুন এসেছি। এ ঘটনায় এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ সদস্যকে আমানতগঞ্জ ফাঁড়ি ইনচার্জের জিম্মায় দেওয়া হচ্ছে।’
সাভার : প্রায় দেড় বছর আগে দুর্নীতির অভিযোগে হেমায়েতপুরে উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসটি বন্ধ করা হয়েছিল। সম্প্রতি চালু হয়। হয়রানির তথ্যের ভিত্তিতে খবর সংগ্রহ করতে যান দেশ টিভির সাংবাদিক দেওয়ান ইমন, ক্যামেরাপারসন জাহিদুল ইসলাম খানসহ আরও কয়েকজন সাংবাদিক। তাঁরা পেশকার শফিকের বক্তব্য নিতে গেলে তিনি ক্ষুব্ধ হন। হামলার চেষ্টা করেন। ওই কার্যালয়ের আরও কয়েকজন হামলা করতে উদ্যত হন। সাংবাদিকের ক্যামেরাও ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সাভার মডেল থানার ওসি আরমান আলী বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। গুরুত্বের সঙ্গে পরবর্তী প্রক্রিয়া নেওয়া হবে।’
কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামের রৌমারীতে প্রেস ক্লাবে ঢুকে সাংবাদিককে গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার ঘটনায় রৌমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক আবদুল কাইয়ুম। রৌমারী থানার ওসি এসআই শাহনেওয়াজ অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিকালে প্রেস ক্লাবে বসে ল্যাপটপে সংবাদ লিখছিলেন সংবাদকর্মী আবদুল কাইয়ুম। সে সময় উপজেলা বিএনপির সদস্য শাহজালাল রানা, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শামীম আহমেদসহ সাত-আটজনের একটি দল প্রেস ক্লাবে ঢুকে তাঁকে গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। রৌমারী ছাড়ারও হুমকি দেওয়া হয় তাঁকে। অভিযুক্ত উপজেলা বিএনপির সদস্য শাহজালাল রানা বলেন, ‘সে রকম কিছু হয়নি। সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা হয়েছে। সম্পর্ক বজায় রাখতে আলোচনা হবে।’ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান রঞ্জু বলেন, ‘প্রেস ক্লাবে গিয়ে সাংবাদিককে গালিগালাজ করা ঠিক হয়নি। বিষয়টি জেনেছি, তাদের শাসিয়েছি। সাংবাদিকরা আমাদেরই লোক। বসে বিষয়টি মীমাংসা করা হবে।’