এক দিনে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। লালমনিরহাটের পাটগ্রাম ও মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা কর্মধা ইউনিয়নের মুরইছড়া সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল দুপুরে নিহত সুখিরাম উরাং (২৬) স্থানীয় মুরইছড়া বস্তির দাসনু উরাংয়ের ছেলে। পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত সবুজ ইসলাম (২৫) উপজেলার জগতবেড় ইউনিয়নের পচাভান্ডার গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে। এক বছর আগে বিয়ে করা সবুজের রয়েছে এক বছর বয়সি ছেলে সন্তান। নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-মৌলভীবাজার : বিনা উসকানিতে সুখিরাম উরাংয়ের ওপর গুলি চালায় বলে জানান স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন। কুলাউড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার জাকির হোসেন জানান, সুখিরাম উরাং পেছনে ডানপাশের পাঁজরে গুলিবিদ্ধ হন। কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক জানান, সুরতহাল রিপোর্টের পর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে বিজিবি ৪৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এএসএম জাকারিয়া জানান, মুরইছড়া সীমান্তে নজরদারি ও টহল বাড়ানো হয়েছে। লালমনিরহাট : ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার মাথাভাঙ্গা থানার ফুলকাডাবরী খালপাড়া এলাকার বিপরীতে পাটগ্রামের জগতবেড় ইউনিয়নের পচাভান্ডার সীমান্ত।
গতকাল ভোরে ৮ থেকে ১০ জন গরু পারাপারকারী বাংলাদেশ-ভারতের শূন্যরেখায় ঢোকেন। এ সময় বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। সবুজ ইসলাম ঘটনাস্থলেই মারা যান। বিজিবি ৬১ ব্যাটালিয়নের শমশেরনগর ক্যাম্পের টহল দল সীমান্ত এলাকায় যায়। বিজিবি বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের জন্য চিঠি দেয়। গতকাল সকাল ১০টা ১০ মিনিটে সীমান্তের কাছে দুই বাহিনীর মধ্যে প্রায় ১৫ মিনিট বৈঠক হয়। বিজিবির শমশেরনগর কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার কামাল উদ্দিন জানান- ‘বৈঠকে আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি এবং লাশ ফেরত চেয়েছি। বিএসএফ জানিয়েছে, লাশ থানা-পুলিশের কাছে আছে। ময়নাতদন্ত শেষে হস্তান্তর করা হবে।
এনসিপির নিন্দা : বাংলাদেশের দুই নাগরিককে হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এনসিপি। গতকাল দলটির সদস্য সাদিয়া ফারজানা দিনা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই নিন্দা জানায় দলটি।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়- বিএসএফের এ জাতীয় অপরাধ আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার নীতি বা কূটনৈতিক সম্পর্কের পরিপন্থি। অতীতের সব সীমান্ত হত্যার স্বাধীন তদন্ত প্রয়োজন। বাংলাদেশ সরকারের উচিত হবে নিহতদের পরিবারকে আইনি সহায়তা দেওয়া এবং ভারত সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করা। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এ ধরনের অন্যায় ও অমানবিক কর্মকাণ্ড যাতে আর কেউ করতে না পারে, সে জন্য বৈশ্বিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আন্তরিক দৃষ্টি আকর্ষণ করে এনসিপি।