রাজধানীতে ভবনের সংখ্যা ২১ লাখের বেশি। এর মধ্যে ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলায় কমপক্ষে ৬ লাখ ভবন যাচাই করতে হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, সম্প্রতি ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে। এরপর কয়েকবার আফটার শক হয়েছে। কিন্তু সামনে বড় ধরনের ভূমিকম্প হবেই। এর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে এখনই সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি জনসচেতনতাও বাড়াতে হবে।
গতকাল ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ (আইইবি) ‘ভূমিকম্প ঝুঁকি হ্রাসে প্রস্তুতি ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে অংশ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। এ সেমিনারের আয়োজন করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এতে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রিয়াজুল ইসলাম। এ ছাড়া বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স, স্থপতি ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।
বুয়েটের অধ্যাপক ড. মেহেদী হাসান আনসারী বলেন, কয়েক বছর আগে নেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করার উদ্যোগটা এখন বাস্তবায়ন করতে হবে। সব ভবন যাচাই করা যাবে না। এলাকাভিত্তিক কমপক্ষে ৬ লাখ ভবন যাচাই করতে হবে। কোন এলাকায় ঝুঁকি বেশি, কোন এলাকায় কম, সেগুলো মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, রাজধানীর ভবনগুলোর ঝুঁকি মূল্যায়নের কাজে রাজউক ও সিটি করপোরেশনকে প্রয়োজনে কঠোর হতে হবে। ব্যক্তিগত সম্পত্তির অজুহাতে এ কাজে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। জননিরাপত্তার স্বার্থে রাজউককে এটা করতে হবে।
সচিব মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ভূমিকম্প ঝুঁকি মোকাবিলায় যুগোপযোগী পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। এ ছাড়া মাঠপর্যায়ের তদারকি জোরদার এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স নীতি কঠোরভাবে অনুসরণের জন্য রাজউককে নির্দেশনা দেন তিনি।
রাজউকের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, একটি নিরাপদ ও আধুনিক নগর গড়ে তুলতে সরকারি প্রতিষ্ঠান, পেশাজীবী, ভবন মালিক, ডেভেলপারসহ সব অংশীজনের সম্মিলিত সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। ভূমিকম্প সচেতনতা বৃদ্ধি ও দুর্যোগ প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমে সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন।