তিন মাস ভারতের কারাগারে থাকা ৩২ বাংলাদেশি জেলেকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন। বুধবার বিকেলে মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের প্রধান কার্যালয়ে এসব জেলেদের আনুষ্ঠনিকভাবে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বাংলাদেশ ও ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমঝোতা ও বন্দি বিনিময় চুক্তির অংশ হিসেবে এসব জেলেদের মঙ্গলবার বিকালে বঙ্গোপসাগরে মোংলা কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করে ভারতীয় কোস্টগার্ড।
মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন জানায়, বাংলাদেশ-ভারত আন্তর্জাতিক সমুদ্র সীমায় বাংলাদেশ জলসীমার মধ্যে অবৈধভাবে মৎস্য আহরণরত অবস্থায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী গত ১২ জুলাই এবং ২ আগস্ট ৩ টি ফিশিং ট্রলারসহ ৪৭ জন ভারতীয় জেলেসহ আটক করে। অপরদিকে, গত ১২ এবং ১৭ সেপ্টেম্বর ভারতীয় জলসীমায় মৎস্য আহরণের অভিযোগে ২টি বাংলাদেশী ফিশিং ট্রলারসহ ৩২ জন বাংলাদেশি জেলেকে আটক করে ভারতীয় কোস্টগার্ড। দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতার মাধ্যমে আটক থাকা এসব জেলেদের বন্দি বিনিময়ের সিদ্ধান্ত হয়। তার অংশ হিসেবে ৯ ডিসেম্বর বিকালে বাংলাদেশ-ভারত আন্তর্জাতিক মেরিটাইম বাউন্ডারি লাইন এ বাংলাদেশে আটক থাকা ৪৭ জন ভারতীয় জেলেকে ৩ টি ফিশিং ট্রলারসহ ভারতীয় কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করা হয়। একইসাথে ভারতে আটক থাকা ৩২ জন বাংলাদেশী জেলেকে ট্রলারসহ বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করে। বাংলাদেশি এসব জেলেদের বুধবার বিকালে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে মোংলা কোস্টগার্ড।
এদিকে বাংলাপদেশি জেলেরা জানান, ভারতের জেলে থাকা অবস্থায় বাংলাদেশী জেলেদের নির্যাতন করা হয়েছে। তাদের মাছ, নগদ টাকা ও মূল্যবান মালামাল নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখনো ভারতের জেলে বাংলাদেশি শতাধিক মৎস্যজীবিসহ বিভিন্ন অপরাধে আটক রয়েছেন। তারা ওখানে মানবেতর জীবন যাপন করছে। বাংলাদেশ সরকারের কাছে ভারতে আটক জেলেসহ অন্যান্যদের ফিরিয়ে আনার দাবি জানান জেলেরা।
ভারতের হাতে ফেরত আসা জেলে মো. ইউনুস বলেন, তিন মাস ভারতের জেলে ছিলাম। ভারতের জেলে থাকা অবস্থায় আমাদের অমানসিক নির্যাতন করেছে। বিভিন্ন সময় বাংলাদেশী জলসীমায় মাছ ধরার অপরাধে ভারতীয় জেলেদের আটক করলেও তাদের সরঞ্জামাদি বাংলাদেশি কোস্টগার্ড ফেরত দেয়। কিন্তু ভারতের সীমানায় বাংলাদেশী জেলেদের আটক করলে ভারতীয় কোস্টগার্ড বা বিএসএফ কোন মালামাল ফেরত দেয় না। ভারতের কারাগারে আমার মতো আরও অনেক বাংলাদেশি আটক আছে। তাদেরও কষ্টের শেষ নেই। সরকারের কাছে অনুরোধ, তাদেরও দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এএম