ব্যাংকের ভঙ্গুর অবস্থা ও উন্নয়ন ব্যয় কমে যাওয়ার কারণে রাজস্ব আদায় কমেছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। তিনি বলেন, বেশ কিছু ব্যাংকের অবস্থা খুবই খারাপ, এতে ব্যাংক খাত থেকে কর্পোরেট কর কমেছে। আবার উন্নয়ন ব্যয় কমে যাওয়ার ফলে সেখানে থেকে যে বিল আসতো সেটাও কমেছে। এর ফলে রাজস্ব আদায় কিছুটা কমেছে। তবে এনবিআরে অটোমেশন জোরদারসহ বেশ কিছু উদ্যোগের ফলে অন্য খাত থেকে রাজস্ব আদায় করে ঘাটতি কমে আসছে।
মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ে এনবিআর আয়োজিত ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। আগামীকাল বুধবার (১০ ডিসেম্বর) থেকে ভ্যাট সপ্তাহ শুরু হচ্ছে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ১০ ডিসেম্বর থেকে ভ্যাট দিবস শুরু করছে। চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। নিবন্ধনকে গুরুত্ব দিতে এবার প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে ‘সময়মত নিবন্ধন নিব, সঠিকভাবে ভ্যাট দিব’।
এ প্রতিপাদ্যকে গুরুত্ব দিয়ে আগামী ১০ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশব্যাপী বিশেষ নিবন্ধন ক্যাম্পেইন পরিচালিত হবে, যার উদ্দেশ্য হবে ১ লাখ নতুন ভ্যাট নিবন্ধন প্রদান করা। বর্তমানে দেশে ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৬ লাখ ৪৪ হাজার।
তিনি বলেন, বিগত অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মোট আদায়ের ৩৮ শতাংশ ভ্যাট হতে আদায় করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে বিগত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২২ শতাংশ বেশি ভ্যাট আদায় হয়েছে।
ভ্যাট আদায়ের ক্ষেত্রে নানামুখী চ্যালেঞ্জ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনিবন্ধিত ব্যবসা, পূর্ণাঙ্গ অটোমেশনের অভাব, রেয়াত-শৃঙ্খল কার্যকর না হওয়া, অতিরিক্ত অব্যাহতি, ম্যানুয়াল অডিট ব্যবস্থা, ই-কমার্স ও উদীয়মান ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলো থেকে ভ্যাট সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। বিদ্যমান এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রাজস্ব ব্যবস্থাকে আধুনিক এবং ডিজিটালাইজড করার লক্ষে অনলাইন সিস্টেমে নিবন্ধন গ্রহণ, অনলাইন রিটার্ন দাখিল, ই-সহগ, অনলাইন পেমেন্ট, ই-রিফান্ড, ই-অডিট, ভ্যাট স্মার্ট চালান প্রবর্তন, ভ্যাট ফাঁকি মোকাবিলায় 'রিস্ক-বেসড' অডিট সিস্টেম চালুসহ বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে বাড়তি রাজস্ব মোবাইল ফোন ব্যবসা ব্যাহত হচ্ছে। মোবাইল ফোনসেট ব্যবসায়ীরা এ বিষয়ে বেশ কিছু দাবি দাওয়া জানিয়ে আসছে।
এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এ বিষয়ে ক্ষমতা এনবিআর-এর হাতে নেই। চলতি বছরে থেকে কর ছাড় দেওয়ার ক্ষমতা এনবিআরের হাতে থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। এখন এনবিআর এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না; যা করার তা করবে জাতীয় সংসদ। তবে যেহেতু এখন সংসদ নেই, আগামী সংসদ আসার আগে পর্যন্ত সরকার অধ্যাদেশ জারি করে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।
বিডি-প্রতিদিন/শআ