বন্যপ্রাণী রক্ষায় নতুন প্রজন্মের ভূমিকা অনস্বীকার্য বলে জানিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেছেন, বন্যপ্রাণী উদ্ধার, পরিচর্যা ও প্রকৃতিতে পুনর্বাসনে তরুণদের ইতিবাচক মনোভাব দেশের জন্য অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। বন্যপ্রাণী নিরাপত্তা ও সংরক্ষণে জনগণের সচেতনতা আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বনভবনে বন্যপ্রাণী, বন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, বন্যপ্রাণী রক্ষায় একীভূত কণ্ঠস্বর অত্যন্ত প্রয়োজন। যারা বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংস করে অর্থনৈতিক যুক্তি তুলে ধরে জনসমর্থন নিতে চায়, তাদের প্রতিরোধে সচেতনতা, ভালোবাসা ও সঠিক তথ্য ছড়িয়ে দিতে হবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, মানুষ ও প্রকৃতি পাশাপাশি টিকিয়ে রাখার নৈতিক মূল্যবোধ সামনে রেখে কাজ করতে হবে। আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ জীবজগতের প্রতি সহমর্মিতা ও সংরক্ষণশীল আচরণের শিক্ষা দেয়। অসহায় মানুষ ও প্রাণীর পাশে দাঁড়ানোই প্রকৃত মানবিকতা।
সভায় রিজওয়ানা হাসান আগামী বছর ৬৪ জেলার বন্যপ্রাণী কর্মীকে স্বীকৃতি প্রদান করা হবে বলে ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম আরও উৎসাহিত হবে এবং প্রতিটি জেলায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে একজন প্রতিনিধিত্বশীল কর্মী গড়ে উঠবে।
এছাড়া বন্যপ্রাণী অপরাধ মোকাবিলায় নতুন ইউনিট গঠনের সরকার অনুমাদন দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। পাশাপাশি চলমান উদ্ধার কার্যক্রমে আধুনিক সরঞ্জাম ও পরিবহন সহায়তা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান পরিবেশ উপদেষ্টা।
এসময় সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির মহাপরিচালক ড. মো. ছগীর আহমেদ, জীববৈচিত্র্য বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস অনুষদের প্রতিষ্ঠাতা ডীন ড. মো. জালাল উদ্দিন সরদার এবং বিবিসিএফ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মোল্যা রেজাউল করিম।
অনুষ্ঠানে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বিশেষ অবদানের জন্য ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খানসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়।
এর আগে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সামরিক জাদুঘরে বাংলাদেশ এনার্জি কনফারেন্স এর উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন। সেখানে তিনি সরকারি ভবনে কার্যকর রুফটপ সোলার স্থাপন, পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন করে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে স্বচ্ছ সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
বিডি প্রতিদিন/কামাল