কনকনে শীত নেমেছে শহরে। রাতের অন্ধকারে রাস্তার পাশে ছেঁড়া কাগজ বিছিয়ে শুয়ে থাকা এক ব্যক্তির পাশে জড়ো হয়ে আছে কয়েকটি কুকুর। ক্ষুধা, শীত কিছুই যেন আলাদা করতে পারেনি দুলাল মিয়া ও কুকুরগুলোর এই অবিচ্ছেদ্য বন্ধনকে। এ দৃশ্যই জানান দেয় অসহায় দুলালের জীবনের নির্মম বাস্তবতা এবং মানুষ-পশুর নিখাদ ভালোবাসার গল্প।
এই শীতের রাতে দুলাল মিয়ার পাশে দাঁড়াতে মানবিক নজির স্থাপন করেছে বসুন্ধরা শুভসংঘ আনন্দ মোহন কলেজ শাখা। তারা দুলালকে উপহার হিসেবে পৌঁছে দেয় মানসম্মত একটি স্লিপিং ব্যাগ, আরামদায়ক বালিশ, বেতের পাটি, শীতের জামা ও পুষ্টিকর খাবার সামগ্রী (বিস্কুট, কমলা, আঙ্গুর, খেজুর, কলা ইত্যাদি)। শুধু দুলাল নয়, তার সঙ্গে থাকা কুকুরগুলোর জন্যও ছিল আলাদা আয়োজন যা সত্যিই ব্যতিক্রমী ও নজিরবিহীন এক উদাহরণ।
বুধবার সন্ধ্যায় এই আয়োজনে বিশেষভাবে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা শুভসংঘ আনন্দ মোহন কলেজ শাখার উপদেষ্টা জিয়াউল হক মোহাম্মদ জুয়েল, সৈয়দ শফিউল আলম, নিজাম উদ্দিন সৌরভ।
এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক আনিমুর রহমান রিয়াদ, প্রচার সম্পাদক আনিতুর রহমান সাদি, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শাহ আলম জীবন, সদস্য রতন মিয়া, স্বপ্নীল, এবং বসুন্ধরা শুভসংঘের অন্যান্য সদস্যরা।
উপদেষ্টা জিয়াউল হক মোহাম্মদ জুয়েল এই উদ্যোগকে হৃদয়স্পর্শী ও অনন্য উল্লেখ করে বলেন, ‘এই মহৎ কাজে অংশ নিতে পেরে আমি ভীষণ আনন্দিত। বসুন্ধরা শুভসংঘের পাশে থাকা আমার জন্য গর্বের। ভবিষ্যতেও সমাজসেবামূলক প্রতিটি কাজে আমি তাদের সঙ্গে থাকব—এটাই আমার অঙ্গীকার।’
সংগঠনের সভাপতি নাফিউল হাসান মুবিন জানান, একদিন রাতের পথচলায় রাস্তার পাশে দুলাল মিয়াকে ইটকে বালিশ বানিয়ে এবং কাগজ-পলিথিন বিছিয়ে ঘুমাতে দেখে তার মন ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। বিষয়টি তিনি সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের জানালে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্যোগ গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। খুব দ্রুত তারা প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে এনে সরাসরি দুলাল মিয়ার হাতে পৌঁছে দেন। স্লিপিং ব্যাগ কিভাবে ব্যবহার করলে তিনি আরামে থাকতে পারবেন সেটিও তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার মুখের হাসিই তাদের পরিশ্রমের প্রাপ্তি।’
মানবিক এই কার্যক্রমে আরও উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক আনিমুর রহমান রিয়াদ, প্রচার সম্পাদক আনিতুর রহমান সাদি,ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শাহ আলম জীবন, সদস্য রতন মিয়া, স্বপ্নীল প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/তানিয়া