যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা ভেনেজুয়েলা উপকূল থেকে একটি তেলের ট্যাংকার জব্দ করেছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্যারিবীয় অঞ্চলে সেনা, যুদ্ধজাহাজ, বিমানবাহী রণতরী, যুদ্ধবিমান জড়ো করে একের পর এক তথাকথিত ‘মাদকবাহী নৌকায়’ হামলা চালানো ওয়াশিংটন যে ভেনেজুয়েলার নিকোলাস মাদুরো সরকারের ওপর চাপ আরও বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে এ ঘটনাকে তার লক্ষণ মনে করা হচ্ছে। ‘আমরা কেবলই ভেনেজুয়েলা উপকূলে একটি ট্যাংকার জব্দ করেছি। বেশ বড় ট্যাংকার, খুবই বড়, সত্যিকার অর্থে এটি এখন পর্যন্ত জব্দ হওয়া সবচেয়ে বড়, ’ ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের সাংবাদিকদের এ কথা বলেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। ট্যাংকার জব্দের ভিডিও প্রকাশ করতে গিয়ে মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি নৌযানটির বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘অপরিশোধিত তেলের এই ট্যাংকারটি ভেনেজুয়েলা ও ইরানে নিষেধাজ্ঞা থাকা তেল পরিবহনে ব্যবহৃত হতো।’ কারাকাস যুক্তরাষ্ট্রের এ কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে একে ‘আন্তর্জাতিক জলদস্যুতা’ আখ্যা দিয়েছে। এর আগে দেশটির প্রেসিডেন্ট মাদুরো জোর গলায় ঘোষণা করেন, ভেনেজুয়েলা কখনোই ‘তেল উপনিবেশ’ হবে না। বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি তেলের মজুত থাকা ভেনেজুয়েলা পাল্টা অভিযোগে বলেছে, মাদক নয়, ওয়াশিংটনের লক্ষ্য হচ্ছে তাদের তেল সম্পদ চুরি করা।-রয়টার্স
ট্যাংকার জব্দের খবরে স্বল্পমেয়াদি সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ বেড়ে যাওয়ায় বুধবার ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের দাম খানিকটা বেড়ে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপ ওই জলসীমায় জাহাজ চলাচলে হুমকি বাড়াতে ও ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি বিঘ্নিত করতে পারে বলে বিশ্লেষকরা সতর্কও করেছেন। মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রণালয় ও মার্কিন কোস্টগার্ড এই জব্দ কার্যক্রম সমন্বয়ে ছিল বলে জানিয়েছেন বন্ডি। তার দেওয়া ভিডিওতে সামরিক হেলিকপ্টারকে একটি বড় জাহাজের ওপর ভাসতে, সেনাদের দড়ি ব্যবহার করে জাহাজের ডেকে নামতে ও উর্দিধারী লোকজনকে বন্দুক নিয়ে জাহাজের মধ্যে চলাচল করতে দেখা গেছে। ঊর্ধ্বতন এক সামরিক কর্মকর্তা সিবিএসকে জানিয়েছেন, ট্যাংকার জব্দ অভিযানে ব্যবহৃত হেলিকপ্টারগুলো পাঠানো হয়েছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস গেরাল্ড ফোর্ড থেকে। গত মাসেই এ রণতরীটি ক্যারিবীয় অঞ্চলে পাঠানো হয়। অভিযানে দুটি হেলিকপ্টার, কোস্টগার্ডের ১০ সদস্য, ১০ মেরিন সেনার পাশাপাশি বিশেষ বাহিনীর সদস্যরাও ছিলেন। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এ অভিযানের বিষয়ে অবগত ছিলেন এবং ট্রাম্প প্রশাসন সামনে এ ধরনের আরও পদক্ষেপের কথা ভাবছে, সিবিএসকে বলেছে একটি সূত্র। জব্দ ট্যাংকারের তেল দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কী করবে, এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেছেন, ‘মনে হচ্ছে, আমরাই রেখে দেব।’