নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের অবহেলার কারণে জুয়েল মিয়া (৩২) নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর থেকে দায়িত্ব হস্তান্তর না করেই কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসপাতাল ত্যাগ করায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. আজিমুল সাদাত সুমন।
জানা গেছে, শ্বাসকষ্ট, গলা ব্যথা ও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) জুয়েল মিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তি হওয়ার পর নিয়মিত রাউন্ডের চিকিৎসক তাকে মাত্র একবার দেখেন। বুধবার থেকে রোগীর অবস্থার অবনতি হলে রাতে ডিউটিরত চিকিৎসক ডা. আজিমুল সাদাত সুমনকে ডাকলেও তিনি রোগী দেখতে আসেননি। পরে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ভোর চারটার দিকে জুয়েল মিয়া মারা যান।
মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে চিকিৎসক সুমনকে হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে। সকালে তিনি দায়িত্ব হস্তান্তর না করেই চলে যাওয়ায় নার্স ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হতবাক হয়ে যায়।
জুয়েলের স্ত্রী লাকি আক্তার বলেন, একবার দেখলে ডাক্তার হয়তো আমার স্বামীকে বাঁচাতে পারতেন। নার্সরা অনেকবার ডাকলেও তিনি আসেননি। ডিউটি কক্ষে দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে ছিলেন।
কর্তব্যরত নার্স অমৃতা হাজং স্বীকার করে বলেন, আমরা সবাই মিলে ডাকলেও স্যারকে আনতে পারিনি। এটা খুবই দুঃখজনক। অন্তত মারা যাওয়ার পর একবার দেখে যাওয়া উচিত ছিল।
এদিকে সকালে খবরটি ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। অভিযুক্ত চিকিৎসককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে তাকে বারবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
আটপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. উত্তম কুমার পাল বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। হাসপাতালে মাত্র তিনজন চিকিৎসক, তাই দায়িত্বশীলতা আরও বেশি প্রয়োজন। তিনি রাতে রোগীর অবনতির কথা জেনে পাশে থাকা উচিত ছিল। সকালে দায়িত্ব হস্তান্তর না করে চলে যাওয়াটা খুবই হতাশাজনক। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/মাইনুল