পাকিস্তানের সাবেক গোয়েন্দাপ্রধানকে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা লঙ্ঘন ও রাজনীতিতে হস্তক্ষেপসহ একাধিক অভিযোগে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন সামরিক আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্ত ফয়েজ হামিদ বর্তমানে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের শাসনামলে ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন।
খানের ঘনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত হামিদ ২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরপরই আগাম অবসরে যান।
পাকিস্তানে প্রথমবারের মতো কোনো সাবেক আইএসআই প্রধানের বিরুদ্ধে আদালত–মার্শাল হলো।
তার আইনজীবী জানিয়েছেন, তিনি রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। পাকিস্তানের সামরিক কাঠামোয় আইএসআই প্রধানকে দ্বিতীয় সর্বাধিক ক্ষমতাধর পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ শাখা (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ১৫ মাসব্যাপী এ আদালত–মার্শাল কার্যক্রম শুরু হয়েছিল ১২ আগস্ট ২০২৪, পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টের অধীনে।
হামিদের বিরুদ্ধে চারটি অভিযোগে বিচার হয়- ‘রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততা, অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত করা, ক্ষমতা ও সরকারি সম্পদের অপব্যবহার এবং নাগরিকদের ক্ষতি সাধন।’
আইএসপিআর আরো জানায়, হামিদকে তার পছন্দের আইনজীবী নিয়োগের অধিকার দেওয়া হয়েছিল এবং রায়ের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ফোরামে—অর্থাৎ পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে—আপিল করার অধিকার আছে।
আদালত–মার্শালটি সামরিক আদালতে বন্ধ কক্ষে অনুষ্ঠিত হওয়ায় মামলার সুনির্দিষ্ট বিবরণ প্রকাশ করা হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামিদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির অভিযোগ আলাদাভাবে বিবেচিত হচ্ছে।
ধারণা করা হয়, এটি ২০২৩ সালের ৯ মে ইমরান খানের গ্রেপ্তার-পরবর্তী সহিংস বিক্ষোভে হামিদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ সংশ্লিষ্ট।
হামিদের আইনজীবী মিয়ান আলি আশফাক বলেন, তার মক্কেল ‘হাজার শতাংশ নির্দোষ, কিন্তু আদালত তার সিদ্ধান্ত দিয়েছে।’
তিনি বিবিসিকে বলেন, আমরা রায়ের ব্যাপারে কিছুই জানতাম না, আইএসপিআরের প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমেই জানতে পেরেছি। এখন আমরা রায়ের কপি পাওয়ার জন্য আবেদন করছি। পেলে পর্যালোচনা করে অবিলম্বে আপিল করব। প্রথম ফোরাম হলো সেনাপ্রধান; সেখানেই আপিল করব। আমরা আশাবাদী, পরবর্তী ফোরামে আমাদের মামলা তুলে ধরে ন্যায়বিচার পাব।
বিডি-প্রতিদিন/মাইনুল