প্রতি বছরই দেশে কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আসে শরীয়তপুরের কার্ত্তিকপুরের মৃৎশিল্পীদের হাত ধরে। অথচ সঠিক প্রশিক্ষণ আর পৃষ্ঠপোশকতার অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প। একদিকে উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি, অন্যদিকে বাজারের চায়না থেকে আমদানিকৃত পণ্যের সহজলভ্যতার কারণে লোকসানের বোঝা বাড়ছে মৃৎশিল্পীদের।
কাদা মাটি আর শিল্পীর হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় ফুলের টব, খেলনা, নাইট ক্যান্ডেল, বিভিন্ন ধরনের শোপিসসহ হাজারেরও অধিক ডিজাইনের পণ্য তৈরি হচ্ছে শরীয়তপুরের কার্ত্তিকপুরে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ইউরোপ, আমেরিকায় রপ্তানি হচ্ছে এখানকার তৈরি পণ্য সামগ্রী। দেশ বিদেশের ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী নতুন নতুন সব ডিজাইনের পণ্য সামগ্রী তৈরি করছে ডিজাইনার আর শিল্পীরা।
১০ বছর আগেও এ পেশার সঙ্গে জড়িত ছিল এই অঞ্চলের ৭ থেকে ৮ হাজার মানুষ। ক্রমাগত লোকসানের বোঝা সইতে না পেরে এই পেশা ছেড়েছে অনেকেই। আবার কেউ কেউ বংশ পরম্পরায় বাপ-দাদার ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে বানিয়ে যাচ্ছেন মাটির পণ্য। বর্তমানে কার্ত্তিকপুরে ৮০০-এর মতো মানুষ সম্পৃক্ত রয়েছে এ পেশায়। যার মধ্যে রয়েছে তিন শতাধিক নারী শিল্পী।
জহুর লাল পাল, মালিক, আরকেপি মৃৎশিল্প বলেন, বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে পণ্য সামগ্রী বিক্রি করায় মূল লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মৃৎশিল্পীরা। সরাসরি দেশিবিদেশি ক্রেতাদের কাছে পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা করা গেলে শিল্পটিকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব বলছে সংশ্লিষ্টরা।
মৃৎশিল্প রক্ষায় উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি শিল্পী ও কারিগরদের আধুনিক প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করার প্রয়োজন মনে করেন সুশীল সমাজ।
ঢাকা শহরের আড়ংসহ অভিজাত সব বিপণিবিতানগুলোতে যেসব মাটির তৈরি পণ্য সামগ্রী বিক্রি করা হয় তার মূল জোগানদাতা শরীয়তপুরের মৃৎ শিল্পীরা। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এখানকার পণ্য সামগ্রী রপ্তানি হচ্ছে আমেরিকা, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানসহ উন্নত বিশ্বের অনেক দেশে।