মিসরের পর্যটননগরী শার্ম এল শেখ। লোহিত সাগরের পাড়ে উপকূলীয় অঞ্চলে পাহাড়ে ঘেরা শহরটি। এ শহরের নৈসর্গিক সৌন্দর্য আকৃষ্ট করে সারা বিশ্বের পর্যটককে। পরিচ্ছন্ন ও গোছানো এ শহরে রয়েছে সেন্ট ক্যাথরিন মাউন্ট, সিনাই পর্বতসহ গুরুত্বপূর্ণ সব স্থাপনা। সাগরের তীরে গড়ে ওঠা এ শহরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিবছর প্রায় কোটি মানুষ এখানে ছুটে আসেন। এখানকার রিসোর্টগুলো আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন। সারা বছরই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলন, কূটনৈতিক সভা, কনসার্ট, ক্লাবিং লেগেই থাকে এখানে। সম্প্রতি গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিবিউটর কর্তৃক আয়োজিত পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ-সংক্রান্ত একটি প্রশিক্ষণে অংশ নিতে এই নান্দনিক শহরটি ঘুরে এলাম। প্রশিক্ষণটিতে বিশে^র বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকরা অংশ নেন। আমরা গিয়েছিলাম চারজন। প্রশিক্ষণ শেষে বিশ^ সম্মেলনে অংশ নিই। টানা পাঁচ দিনের আতিথেয়তায় মুগ্ধ সবাই। শহরটির পার্ক রিজেন্সি রিসোর্টটিতে প্রশিক্ষণ এবং বিশ^ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অভিজাত রিসোর্ট মুভেনপিকে থাকার ব্যবস্থা ছিল। এটি একদম লোহিত সাগরের কোলে। প্রতিটি কক্ষ থেকে সাগরের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। শহরটি শান্তির শহর বলেও বিশ্বব্যাপী পরিচিত। ২০১৭ সালের হিসাব অনুযায়ী এ শহরটির জনসংখ্যা প্রায় ৭৭ হাজার। তবে বাণিজ্যিকভাবে কোটি মানুষের বিচরণ ঘটে এখানে। ঐতিহাসিকভাবে এটি ছিল একটি মাছ ধরার শহর। এখানে ছিল সামরিক ঘাঁটি। পরবর্তীতে এটি একটি বাণিজ্যিক ও পর্যটননির্ভর শহরে উন্নীত হয়। মিসরীয় সরকার এ শহরকে সম্প্রসারিত করে একটি প্রধান আন্তর্জাতিক রিসোর্ট শহর হিসেবে উন্নীত করেছে। ২০২৪ সালের জরিপ অনুযায়ী, শার্ম এল শেখ শহরে এক কোটিরও বেশি দর্শনার্থী ঘুরতে আসেন। সেন্ট ক্যাথরিন যেতে হলে ট্যাক্সিতে মিসরীয় পাঁচ হাজার থেকে ছয় হাজার পাউন্ড ভাড়া পড়ে। আড়াই শ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের ভিতর দিয়ে জাবালে মুসা দেখা যায়। যেখানে উঠতে গেলে উটের সাহায্য নিতে হয়। এই পর্বত পরিভ্রমণে সঙ্গে গাইড থাকেন। অনেক সময় বেদুইনরা থাকেন গাইড হিসেবে। ঘুরতে এসে প্রতিক্ষণেই অনুভূত হয়- সত্যিই এটি শান্তির শহর।