চুয়াডাঙ্গায় বিভিন্ন জাতের মালটা ও কমলা চাষ করে সাফল্য পাচ্ছেন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তারা। সহজ চাষ পদ্ধতি ও অধিক ফলন হওয়ায় এ চাষে ঝুঁকছেন নতুন নতুন উদ্যোক্তা। স্বাদ ও বর্ণে আকর্ষণীয় হওয়ায় সহজেই ভোক্তাদের আকৃষ্ট করছে এসব মালটা ও কমলা। জেলাজুড়ে উৎপাদিত মালটা ও কমলা বিদেশি ফলের আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জেলার কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, গাছের ডালে থোকায় থোকায় ঝুলছে মালটা; সঙ্গে আছে কমলাও। দেখে মনে হবে মালটা বা কমলা নির্ভর কোনো দেশের বাগান এটি। এ রকম দৃশ্য প্রথম দেখাতেই আশান্বিত হচ্ছেন দর্শনার্থীরা। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের মাঠে গিয়ে এ দৃশ্য চোখে পড়ে। ওই গ্রামের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা আনিছুর রহমান ও জামাল হোসেন এ বাগান করেছেন। তাদের মতো জেলায় আরও অনেকে এ চাষে সম্পৃক্ত।
বাগান মালিকরা জানান, সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে দেশের মাটিতে সহজেই মালটা ও কমলায় সফলতা পাওয়া সম্ভব। এ জন্য সঠিক জাত নির্বাচন ও যথাযথ সার ব্যবস্থাপনা গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক জাতের মালটা ও কমলা চাষ করে তরুণ উদ্যোক্তারা স্বাবলম্বী হতে পারবেন। উদ্যোক্তারা জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলায় প্রচুর পরিমাণে বারি-১ জাতের মালটা ও দার্জিলিং জাতের কমলার চাষ হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, এক বিঘা জমিতে ১০০ থেকে ১২০টি মালটার চারা রোপণ করা যায়। পরিচর্যাসহ ফল আসা পর্যন্ত খরচ প্রায় ১ লাখ টাকা। আড়াই বছর বয়সে গাছে ফল আসা শুরু হয়। তিন থেকে চার বছর বয়সে পরিপূর্ণ ফল আসে। এতে এক বিঘা জমির পূর্ণ বয়স্ক গাছে বছরে তিন-চার লাখ টাকার মালটা পাওয়া সম্ভব।
সম্ভাবনাময় এসব ফলের বাগান দেখতে প্রতিদিনই আসেন দর্শনার্থীরা। সম্প্রতি জয়রামপুরের এ ফলের বাগান দেখতে আসেন দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিথি মিত্র। তিনিও এ চাষ নিয়ে সম্ভাবনার কথা বলেন। দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিথি মিত্র বলেন, ‘বাগানে এসে নিজ চোখে মালটা ও কমলার ফলন দেখে আমি অভিভূত। চুয়াডাঙ্গার ফলচাষিদের সফলতা বাংলাদেশকে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মাসুদুর রহমান সরকার বলেন, চলতি মৌসুমে চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৩২৬ হেক্টর জমিতে মালটা এবং ৭৮ হেক্টর জমিতে কমলার আবাদ হয়েছে। এসব জমি থেকে প্রায় ৫ হাজার মেট্রিক টন ফল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তিনি বলেন, সুস্বাদু এসব ফল চাষে তরুণ কৃষি উদ্যোক্তারা স্বাবলম্বী হবেন।