অনেক দিন ধরে মিলন ক্লাসের সবচেয়ে শান্ত মেয়ে নীলাকে পছন্দ করে। কিন্তু নীলার সামনে গেলেই তার গলা শুকিয়ে যায়, হাত কাঁপতে থাকে। তাই সরাসরি কিছু বলার সাহস সে কখনো পায় না। অনেক ভেবেচিন্তে সে ঠিক করল, গোপনে এক লাভ লেটার লিখে তার মনের কথা বলবে।
রাত জেগে বেশ যত্ন করে প্রেমের চিঠিটা লিখল সে। পরদিন সকালে বন্ধু ইমনকে চিঠিটা দিয়ে বলল, ‘দোস্ত, এটা নীলাকে দিস।’
ইমন চিঠি দেখেই বুঝে ফেলল ব্যাপারটা। কোনো মন্তব্য না করে সে আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিতে নীলাদের ক্লাসে ঢুকল। সেখানে পাশাপাশি বসে আড্ডা দিচ্ছিল দুই বান্ধবী নীলা আর মিলা। ইমন তাড়াহুড়ো করে মিলার হাতেই চিঠিটা দিয়ে বলল,
‘মিলনের মনের কথা লেখা আছে এখানে। তাড়াতাড়ি নাও!’ বলেই উল্টো দিকে হাঁটা দিল সে।
হঠাৎ পাওয়া চিঠিতে মিলা ভীষণ অবাক। কিছুক্ষণ পর চিঠিটা খুলে পড়তেই সে খিলখিল করে হেসে উঠল। সেখানে লেখা ছিল- ‘আমার জানের জান নীলা, তোমার হাসি দেখলে আমার দিল বিলা।’ ‘বিলা’ শব্দটা দিয়ে মিলন পাগল-পাগল ভালোলাগার কথাই বোঝাতে চেয়েছিল। কিন্তু চিঠিটা যে ভুল হাতে পড়েছে। নীলা-মিলা নামে তালগোল পাকিয়ে গেছে। দুই মিনিটের মধ্যেই লাভ লেটারের খবর পুরো ক্লাসে ছড়িয়ে পড়ল। লজ্জায় মিলন বেঞ্চের নিচে লুকিয়ে রইল।
শেষে ইমন দৌড়ে গিয়ে মিলার কাছে ভুলটা স্বীকার করল, চিঠিটা আসলে নীলার জন্যই ছিল।
সব শুনে নীলা হেসে বলল, ‘এই যে জনাব, বেঞ্চের নিচ থেকে বের হয়ে আসেন। লাভ লেটার লেখার সাহস পেলেন, আর দেওয়ার সাহসটা পেলেন না?’ তার কথায় পুরো ক্লাস হাসিতে ফেটে পড়ল। মিলন লজ্জায় মাথা চুলকাতে চুলকাতে বেঞ্চের নিচ থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে এলো।
-দৌলতপুর, মানিকগঞ্জ