পুরাতন ও নিম্নমানের ওষুধ ব্যবহার করায় বরিশাল নগরে মশার উপদ্রব মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) পুরোনো ওষুধ দিয়ে মশা নিধনের কাজ চালাচ্ছে। ফলে মশা মরছে না। এতে দিন-রাত সমানভাবে মশার যন্ত্রণা ভোগ করছেন নগরবাসী। পাশাপাশি বাড়ছে ডেঙ্গু সংক্রমণের আশঙ্কাও।
বিসিসির একটি সূত্র জানিয়েছে, মশা নিধনের ওষুধ সরবরাহের দায়িত্বে ছিল নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের। বর্তমানে তাদের সরবরাহকৃত ওষুধ শেষ হয়ে যাওয়ায় আগের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নাস কাডিল গ্রুপের পুরোনো ও নিম্নমানের ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে নগরীর প্রত্যেকটি এলাকায় মশার উৎপাত বেড়ে গেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সন্ধ্যার পর ঘরে বসা দায় হয়ে পড়েছে। মশক নিধন শাখা সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন ২৮টি ফগার, ৪০টি হ্যান্ড স্প্রে দিয়ে ওষুধ দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে যে পরিমাণ ওষুধ ছিটানো হয়, মশার উৎপাদন এর চেয়ে অনেক বেশি। তাই ওষুধ ছিটানোর পরেও মশা কমানো যাচ্ছে না। রূপাতলীর বাসিন্দা মফিজুল ইসলাম বলেন, ফগিং মেশিনে ধোঁয়া দেয় ঠিকই। কিন্তু মশা তাতে মরে না। বরং ধোঁয়া চোখে লাগে। সদর রোডের বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, দিনরাত ২৪ ঘণ্টা কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হয়। তার পরেও মশার উৎপাত কমছে না।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, একই ধরনের ওষুধ দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে মশার মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। তাই ওষুধ পরিবর্তন ও মশা নিয়ন্ত্রণ কৌশলে বৈচিত্র্য আনা জরুরি। সিটি করপোরেশনের মশক নিধন শাখার কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস জানান, নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ডের সরবরাহকৃত ওষুধ শেষ হয়ে যাওয়ায় অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য পুরোনো ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। নতুন ওষুধ এলেই তা ব্যবহার করা হবে। সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল বারী বলেন, নতুন মশা মারার ওষুধ কেনার জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। খুব শিগগিরই নতুন ওষুধ হাতে পাওয়া যাবে। এর আগে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় নগরবাসীর উদ্বেগ আরও বেড়েছে। নগরবাসীর দাবি, দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।