সিলেট নগরীর ব্যস্ততম সড়ক বিভাজক ও বিদ্যুতের খুঁটিতে ঝুলছে ছোট ছোট সাইনবোর্ড ও ফেস্টুন। তাতে লেখা রয়েছে- ‘সিলেটিরা কখনো উল্টো পথে যায় না’। ট্রাফিক সচেতনতা বিষয়ক সাইনবোর্ডগুলো কে লাগিয়েছে তা কেউই জানেন না।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাইনবোর্ডগুলো তাদের নজরে এলেও এগুলো কারা লাগিয়েছে সে ব্যাপারে তারা অবগত নন। তবে নগরবাসীকে ট্রাফিক আইন মেনে চলার ব্যাপারে উদ্বুব্ধ করতে লাগানো সাইনবোর্ডগুলো সর্বমহলে প্রশংসিত হচ্ছে।
সিলেট নগরীর সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রায় এক মাস ধরে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক), এসএমপি ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে কাজ করছে। তিন প্রতিষ্ঠানের যৌথ অভিযানে সড়ক ও ফুটপাত হকারমুক্ত করা হয়েছে। নগরীর লালদীঘি মাঠে পুনর্বাসন করা হয়েছে হকারদের। সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড। কোথায় কতটি অটোরিকশা থামবে সেটিও নির্ধারণ করে দিয়েছে সিটি করপোরেশন ও পুলিশ প্রশাসন। কিন্তু এত উদ্যোগ নেওয়ার পরও যত্রতত্র গাড়ি ও মোটরসাইকেল পার্কিং এবং উলটো পথে যানবাহন চালানোর প্রবণতা কমছে না। অবৈধ পার্কিং ও উলটো পথে যান চালানোর দায়ে ট্রাফিক পুলিশ ও ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে জরিমানা করলেও নগরবাসীর দীর্ঘদিনের অভ্যাস পরিবর্তন করা সম্ভব হচ্ছে না।
এ অবস্থায় গত কয়েক দিন থেকে নগরীর আম্বরখানা, জিন্দাবাজার, সুবিদবাজার, কাজিরবাজার, মিরাবাজারসহ ব্যস্ততম বেশ কিছু সড়কে সচেতনতামূলক বিভিন্ন সাইনবোর্ড শোভা পাচ্ছে। বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের খুঁটি ও সড়ক বিভাজকে ‘সিলেটিরা কখনো উলটো পথে যায় না’সহ সচেতনতামূলক বিভিন্ন ধরনের সাইনবোর্ড দেখতে পান নগরবাসী। সাইনবোর্ডের নিচে কোনো কর্তৃপক্ষেরও নাম নেই। রাতের আঁধারে সাঁটানো এসব সাইনবোর্ড নিয়ে নগরবাসীর মাঝেও দেখা দিয়েছে কৌতূহল। সাইনবোর্ড কারা লাগিয়েছে তাদের পরিচয় জানা না গেলেও এই উদ্যোগ সর্বমহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে।
সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারের ব্যবসায়ী ইকবাল আহমদ বলেন, ‘আমরা সিলেটি হিসেবে সবসময় গর্ববোধ করি। তাই এ রকম সচেতনতামূলক প্রচারণা সিলেটবাসীর মাঝে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। যেহেতু আমরা নিজেদের সচেতন বলে দাবি করি, তাই ট্রাফিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আমাদেরকে উলটো পথে চলাচলের অভ্যাস পরিহার করা উচিত।’
এ প্রসঙ্গে সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা নিহার রঞ্জন পুরকায়স্থ বলেন, ‘সাইনবোর্ডগুলো আমাদেরও চোখে পড়েছে। এটি প্রশংসনীয় কাজ। শুধু আইন প্রয়োগ করে নয়, সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে মানুষের বিবেককে জাগানো গেলে অনেক অনিয়মই বন্ধ করা সম্ভব’।
এসএমপির ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ্ত দাশ বলেন, ‘নগরীর বিভিন্ন সড়কে সচেতনতামূলক এ রকম সাইনবোর্ড কারা লাগিয়েছে তা আমাদের জানা নেই। তবে কাজটি প্রশংসনীয়।’