পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় করণীয়’ শীর্ষক বিশেষ আলোচনা সভা। উপকূলীয় অঞ্চলের জলবায়ু ঝুঁকি, ঘনঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার প্রভাব বিবেচনায় এই আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন অংশগ্রহণকারীরা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বসুন্ধরা শুভসংঘ পবিপ্রবি শাখার উদ্যোগে আয়োজিত সভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্য সচিব আবু সুফিয়ান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোফাসেরুল হক তন্ময়, তুহিন পারভেজ, জহুর আলমসহ অন্যান্য সদস্যরা।
বক্তারা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে তীব্র আঘাত বহন করছে। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, অতিবৃষ্টি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, নদীভাঙনসহ নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয় ক্রমেই বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে পটুয়াখালী ও বরিশাল বিভাগকে ঘূর্ণিঝড়ের উচ্চঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে বক্তারা জানান—অগ্রিম প্রস্তুতি, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিনির্ভর সতর্কীকরণই ক্ষয়ক্ষতি কমানোর সর্বোত্তম উপায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দুর্যোগ প্রস্তুতি, উদ্ধার কার্যক্রম ও স্বেচ্ছাসেবী কাজে যুক্ত হওয়ার দিকেও গুরুত্বারোপ করা হয়। বক্তারা ক্যাম্পাসে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা টিম গঠন, জরুরি মহড়া, সার্বক্ষণিক তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিতকরণ এবং আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করার আহ্বান জানান। প্রাথমিক চিকিৎসা, নিরাপদ উদ্ধার, পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধ ও স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ প্রদানের ওপরও জোর দেওয়া হয়।
এছাড়া স্থানীয় প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্ট ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সঙ্গে সমন্বিত উদ্যোগ এবং পরিবেশবান্ধব কার্যক্রম যেমন গাছ লাগানো, প্লাস্টিক বর্জ্য কমানো, সবুজ ক্যাম্পাস গঠন, আধুনিক সতর্কীকরণ প্রযুক্তি ও টেকসই সুরক্ষা বাঁধ নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়।
সভায় প্রস্তাব করা হয়, ‘জলবায়ু সচেতনতা ক্যাম্পেইন’ চালানো, শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ততা বাড়ানো এবং উপকূলের মানুষের জীবন-জীবিকা সুরক্ষায় দীর্ঘমেয়াদী উদ্যোগ গ্রহণ করা। বক্তারা বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ পুরোপুরি ঠেকানো সম্ভব না হলেও সঠিক প্রস্তুতি ও সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি অনেক কমাতে পারে।
শেষে বসুন্ধরা শুভসংঘ পবিপ্রবি শাখার নেতৃবৃন্দ ভবিষ্যতে জলবায়ু শিক্ষা, স্বেচ্ছাসেবী প্রশিক্ষণ, দুর্যোগ সাড়া প্রদানের মহড়া ও পরিবেশ সংরক্ষণ অভিযান ধারাবাহিকভাবে চালানোর ঘোষণা দেন। তারা আশা প্রকাশ করেন, শিক্ষার্থীরা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় এগিয়ে এলে উপকূলীয় জনগণের জীবন আরও নিরাপদ হবে।
বিডি-প্রতিদিন/মাইনুল