গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি

সারের ক্ষেত্রে ভর্তুকি বাড়ান

প্রিন্ট ভার্সন

সার কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য ৮৩ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় সারের উৎপাদন খরচও একইভাবে বেড়ে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ সারের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে বেছে নিতে হবে ভর্তুকি বাড়ানোর পথ। এর ব্যত্যয় হলে কৃষি উৎপাদনে তার অপপ্রভাব বাড়বে। হ্রাস পাবে সারের ব্যবহার। দেখা দেবে খাদ্যসংকট। এমনিতেই দেশের বাজারে চাল, আটা, সবজিসহ সব ধরনের পণ্যের দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে। আগে সার কারখানাগুলো প্রতি ঘনমিটার গ্যাস পেত ১৬ টাকায়, সেটি এখন বাড়িয়ে ২৯ টাকা ২৫ পয়সা করা হয়েছে। এর আগে বিগত সরকারের আমলে ২০২২ সালের জুন মাসে সার কারখানায় গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে ২৫৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ বাড়িয়ে ১৬ টাকা করা হয়েছিল। বর্তমানে সার কারখানায় গ্যাসের চাহিদা ও সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে। ঘাটতি পূরণে দাম বাড়িয়ে বাড়তি গ্যাস সরবরাহের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় ও বিসিআইসির প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হয়। বাড়তি টাকা দিয়ে আরও বেশি এলএনজি আমদানি করে সার উৎপাদনে দেওয়া হবে। তাতে করে গ্যাসের অভাবে বন্ধ চারটি সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত হবে। দেশের মোট কৃষি উৎপাদন ব্যয়ের প্রায় ২০ শতাংশই সারের পেছনে খরচ হয়। অর্থাৎ উৎপাদন খরচ বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই সারের ব্যয়ও বেড়ে যাবে। যদি সারের দাম বাড়ানো হয়, কৃষকের মোট উৎপাদন খরচও বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে চালের মূল্যবৃদ্ধিতেও প্রভাব ফেলবে। সারের মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারণ গ্যাসের ক্ষেত্রে সরকার এখন আমদানিনির্ভর। সার উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বাড়ানোর পরও সরকারকে ভর্তুকি দিতে হবে। খাদ্যসহ কৃষিপণ্যের ভোক্তা যেহেতু দেশের ১৮ কোটি মানুষ, সেহেতু সরকারের উচিত হবে সারের দাম না বাড়িয়ে ভর্তুকি আরও বাড়ানো। এর ফলে খাদ্য উৎপাদনে কৃষকদের উৎসাহিত করা হবে। এমনিতে প্রতি বছর কোটি কোটি মণ খাদ্য আমদানি করতে হচ্ছে। সারের মূল্যবৃদ্ধি পেলে কৃষক কৃষি উৎপাদনে নিরুৎসাহিত হবে। খাদ্য আমদানির মাত্রা বাড়বে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত ধরে রাখা কঠিন হবে। যা এড়ানোই হবে উত্তম।