জমি সংকট ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন বিকল্প চাষ পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে সর্বত্র। অল্প জমিতে ও স্বল্প ব্যয়ে কীভাবে কৃষক আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে চাষ করে লাভবান হওয়া যায় কৃষি বিভাগের কাছে এমন পরামর্শ নিয়ে পুকুর পাড়ে পরিত্যক্ত জায়গায় বস্তায় সবজি চাষ করে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন কৃষক লুৎফর রহমান।
সরকারের কৃষি বিভাগের আওতায় টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের অধীন দিনাজপুরের কাহারোলের রামচন্দ্রপুর ইউপির রামচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক মো. লুৎফর রহমান পরিত্যক্ত জায়গায় বস্তায় চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। কাহারোল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে, এখন বিকল্প চাষ পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা বেড়ে চলছে এই উপজেলায়। বস্তায় চাষ এমন এক প্রযুক্তি যা পুকুর পাড় বাড়ির আঙ্গিনা কিংবা ছাদে সহজে চাষ করা যায় এসব সবজি। আধুনিক এই পদ্ধতিতে দো-আঁশ মাটি, পচা গোবর ও ছাই মিশিয়ে চারা রোপণ করা হয় এবং পুকুরের পানি দিয়েই সহজে সেচ দেওয়া যায়। রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসানের তত্ত্বাবধানে এই পুকুর পাড়ের পতিত জমিতে বস্তায় লাউ চাষ সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছেন।
‘‘কৃষক মো. লুৎফর রহমান বলেন, আগে ভাবতাম পুকুর পাড়ের জায়গা চাষের জন্য ভালো না। এখন দেখি ওই জায়গায় সবজি চাষাবাদ করে মোটা অঙ্কের আয় হচ্ছে। যা পরিবারের অর্থনৈতিক জোগান দিচ্ছে। বস্তায় লাউ চাষ করেছি। এই গাছ বেড়ে ওপরে উঠলে মাচায় দিয়েছি।’’
কৃষক মো. লুৎফর রহমান বলেন, আগে ভাবতাম পুকুর পাড়ের জায়গা চাষের জন্য ভালো না। এখন দেখি ওই জায়গায় সবজি চাষাবাদ করে মোটা অঙ্কের আয় হচ্ছে। যা পরিবারের অর্থনৈতিক জোগান দিচ্ছে। বস্তায় লাউ চাষ করেছি। এই গাছ বেড়ে উপরে উঠে মাচায় দিয়েছি। ফলনও ভালো হয়েছে। এখন অগণিত লাউ মাচায় ঝুলছে। আমার এই লাউ দেখে অনেকেই পরিত্যক্ত জমিতে লাউ চাষ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।
কাহারোল উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মল্লিকা রাণী সেহানবীশ জানান, বস্তায় চাষে খরচ কম, শ্রম ও তুলনামূলকভাবে কম লাগে। আগাছা ও রোগ পোকার আক্রমণ কম হওয়ায় ফলন ভালো পাওয়া যায়। দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বস্তায় সবজি চাষ প্রদর্শনী প্রমাণ করেছে উদ্ভাবনী চিন্তা, সচেতনতা ও সঠিক প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে কৃষির প্রতিটি কোণায় উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষি কর্মকর্তা আশা প্রকাশ করেছেন পুকুর পাড়ের পতিত জমিতে বস্তায় লাউ প্রদর্শনী কৃষকদের অনুপ্রাণিত করবে এবং আগামীতে আরও বৃহৎ আকারে এই পদ্ধতি সম্প্রসারিত হবে বলে আশা করেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এমআই