চীন জনসংখ্যায় পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। অর্থনৈতিক দিক থেকেও দ্বিতীয়। তবে অনেকের ধারণা মাও সে তুংয়ের দেশ ইতোমধ্যে প্রথম স্থানে পৌঁছে গেছে। সামরিক শক্তিতে চীন এখন তৃতীয়। আমেরিকা ও রাশিয়ার পর তাদের অবস্থান। তবে এ ক্ষেত্রেও চীন যে খুব দ্রুত শীর্ষস্থানের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে তাতে দ্বিমতের সুযোগ নেই।
চীনের প্রাচীন ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে সমৃদ্ধ ওই দেশটিতে বারবার আগ্রাসন চালিয়েছে বিদেশি হানাদাররা। কখনো কখনো তারা আধিপত্য বিস্তারেও সক্ষম হয়েছে। মঙ্গোলীয় নেতা চেঙ্গিস খানের চীন জয় সে সাক্ষ্য দেয়। তবে হার না মানা এই জাতি হানাদারদের আধিপত্য বেশি দিন মেনে নেয়নি। বিদেশি আগ্রাসনকারীরা একসময় পালাতে বাধ্য হয়েছে। বিদেশি হানাদারদের প্রতিরোধে গড়ে তোলা হয় বিশাল প্রাচীর। বিশ্বের বিস্ময় বলে যা পরিচিত। সেই প্রাচীন যুগে চীনারা ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে স্থল ও সমুদ্রপথে গড়ে তুলেছিল বাণিজ্য। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য চীনাদের ব্যবহৃত সিল্ক পথ তারই প্রমাণ। প্রাচীন ও মধ্যযুগে চীনা নৌবহর দেশে দেশে ঘুরেছে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও বন্ধুত্বের বাণী নিয়ে।
চীনকে বলা হয় প্রাচীন সভ্যতার দেশ। জ্ঞানবিজ্ঞান বিকাশে যে দেশের অবদান বিশাল। এ দেশটিতে জন্মগ্রহণ করেছেন কনফুসিয়াসের মতো মহান দার্শনিক, শিক্ষক ও রাজনৈতিক তাত্ত্বিক (জন্ম খ্রিস্টপূর্ব ৫৫১ ও মৃত্যু খ্রিস্টপূর্ব ৪৭৯)। চীনে আবিষ্কৃত হয় লেখার কাগজ। মুদ্রণপদ্ধতির প্রবর্তকও তারা। চীনারা গান পাউডার বা বারুদের আবিষ্কারক। কম্পাস আবিষ্কৃত হয়েছে চীনে। চীনামাটির বাসন, কাগজের টাকারও উদ্ভব প্রাচীন সভ্যতার ওই দেশে। আজ থেকে ১৪০০ বছর আগেও চীন ছিল জ্ঞানার্জনের জন্য দুনিয়াজুড়ে প্রসিদ্ধ। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর একটি হাদিস তার প্রমাণ। যাতে তিনি জ্ঞানার্জনের প্রয়োজনে চীন দেশে যাওয়ারও নির্দেশনা দেন।
চীনে মাঞ্চু রাজবংশ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৬৪৪ সালে। যে রাজবংশ টিকে ছিল ১৯১১ সাল পর্যন্ত। চীনের ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি এই রাজবংশের সম্রাটরা। চীনের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে ওঠে মাঞ্চু সম্রাটদের আমলে। ব্রিটিশ ও অন্যান্য ইউরোপীয়রা চীনে আসে বাণিজ্যের নামে। তারপর আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টাও চালায় নানাভাবে। ইউরোপীয়দের আধিপত্যবাদী বাণিজ্যে চীনারা একসময় হয়ে ওঠে আফিমে বুঁদ একটি জাতি। ব্রিটিশরা চীনে তাদের উপনিবেশ স্থাপন করতে না পারলেও মাঞ্চু সম্রাটদের দুর্বলতায় সে দেশের ওপর পরোক্ষভাবে বজায় রেখেছিল তাদের আধিপত্য। চীনের হংকং বন্দরকে ৯৯ বছরের চুক্তি বলে ব্রিটিশরা ব্যবহারের সুযোগ পায়। একইভাবে পর্তুগিজরা আধিপত্য বিস্তার করে চীনের ম্যাকাওয়ে। চীনের মহামহিম সম্রাটের তা মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। ১৮৯৪ সালে শুরু হয় চীন জাপান যুদ্ধ। এই যুদ্ধে জাপান চীনের কাছ থেকে কোরিয়া দখল করে। এর ফলে বিশ্বশক্তি হিসেবে জাপানের আত্মপ্রকাশ ঘটে। চীনারা এই লজ্জা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে ওঠে। মহান জাতীয়তাবাদী নেতা ডা. সান ইয়েত সেনের নেতৃত্বে সংগঠিত বিপ্লবে ১৯১১ সালে রাজতন্ত্রের পতন ঘটে। ছয় বছর বয়সি সর্বশেষ সম্রাট পুয়ির পদত্যাগের অধ্যাদেশ জারি করা হয়। চীনের নানজিংয়ে বিপ্লবী সেনারা অস্থায়ী জোট সরকার গঠন করে। দেশের উত্তর ও পশ্চিম অংশের গৃহযুদ্ধ সমঝোতার মাধ্যমে শেষ হয়। এটি ছিল ১৯১১ সালের চীনা বিপ্লবের সাফল্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জাতীয়তাবাদীদের কোন্দলে জাতীয় সরকার গঠন সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতি নেতিবাচক দিকে মোড় নিতে থাকে। শুরু হয় রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্র। রাজনৈতিক বিভাজনের সুযোগে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যুদ্ধবাজরা জেঁকে বসে।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় জাপান চীনের ওপর চড়াও হয়। বিশাল এলাকা তাদের দখলে চলে যায়। গণহত্যা ও গণধর্ষণের শিকার হয় চীনারা। জাপানি দখলদারদের বিরুদ্ধে চীনের জাতীয়তাবাদী সরকার শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়। জাপানিদের গণহত্যা ও ধর্ষণ জনমনে সীমাহীন ক্ষোভ সৃষ্টি করে। বিদেশি হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে গড়ে ওঠে লাল ফৌজ। তারা জাপানিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পাশাপাশি সাম্যবাদে বিশ্বাসী এক নতুন চীন প্রতিষ্ঠায় দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ করে। ১৯৪৯ সালের ১ অক্টোবর মাও সে তুংয়ের নেতৃত্বে লাল ফৌজ চীনের রাজধানী বেইজিং দখল করে। ওই দিনই শপথ নেয় গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকার। চিয়াং কাইসেকের জাতীয়তাবাদী সরকার ফরমোজা দ্বীপে পালিয়ে যায়। মাও সে তুং গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রতিষ্ঠাতা। তবে এ দেশটিকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত করার পথ দেখিয়েছেন আরেক চীনা নেতা দেং সিয়াও পিং।
॥দুই॥
চীন বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু দেশ। হাজার বছর ধরে গড়ে উঠেছে দুই দেশের সম্পর্ক। আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে চীনে ইসলাম প্রচার হয় রসুল (সা.)-এর সাহাবি সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাসের নেতৃত্বে। তিনি বাংলাদেশ হয়ে চীনে গিয়েছিলেন। চীনে বৌদ্ধ ধর্ম বিস্তারে বাংলাদেশের অতীশ দীপঙ্করের নাম ইতিহাসের অংশ। আধুনিক চীনের প্রতিষ্ঠাতা মাও সে তুংয়ের রাজনৈতিক গুরু ছিলেন এমএন রায় নামের একজন বাঙালি। আধুনিক চীনের সঙ্গে বাঙালিদের সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম প্রাতঃস্মরণীয়। চীন সরকারের আমন্ত্রণে ১৯২৪ সালে তিনি সে দেশ সফর করেন। কবিগুরুকে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা দেওয়া হয় চীনে। কনফুসিয়াসের দেশে শুরু হয় রবীন্দ্রচর্চা। শত বছর পরও কবিগুরু আজও চীনে বেশ নন্দিত।
বাংলাদেশ চীন বন্ধুত্বের সেতু নির্মাণে আমাদের তিন জাতীয় নেতা মওলানা ভাসানী, শেখ মুজিবুর রহমান ও রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদান অবিস্মরণীয়। পাকিস্তান আমলে ১৯৫২ সালে মাত্র ৩২ বছর বয়সে শেখ মুজিব চীন সফর করেন। সে সময়ে তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক। দলের সভাপতি মওলানা ভাসানীর নির্দেশে পাকিস্তানি এক প্রতিনিধিদল চীন সফর করে। চীনের বেইজিংয়ে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় শান্তি সম্মেলন। নয়া চীনের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ২ থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত ওই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। শেখ মুজিব ছিলেন সে দলের অন্যতম সদস্য। চার বছর পর তিনি যখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, তখন আবার চীন সফর করেন পাকিস্তানি প্রতিনিধিদলের নেতা হিসেবে। চীন সফর শেখ মুজিবের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়। সমাজতান্ত্রিক ধ্যানধারণার প্রতি দুর্বলতার শুরু সে সময়ে। চীনের সর্বোচ্চ নেতা মাও সে তুংয়ের সঙ্গে প্রতিনিধিদলের দেখা হয়। ২৫ দিনের সফরে শেখ মুজিব চীনের শ্রমিক ও কৃষকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মেশেন। খেটে খাওয়া মানুষের কল্যাণে চীনের সাম্যবাদী সরকারের কর্মসূচিতে মুগ্ধ হন তিনি। ‘আমার দেখা নয়া চীন’ বইয়ে তিনি এ বিষয়ে তুলে ধরেছেন। তার ভাষায় ‘নয়াচীন বেকার সমস্যা দূর করতে চেষ্টা করছে। এজন্য তারা নজর দিচ্ছে কুটিরশিল্পের দিকে। কুটিরশিল্পে সরকার থেকে সাহায্য করা হয়। হাজার হাজার বেকারকে কাজ দেওয়া হয়েছে। আমাদের দেশের তাঁতিদের মতো লাখ লাখ তাঁতি কাপড় তৈয়ার করে সুতা কেটে জীবন ধারণ করে।’
সাংহাইয়ের ইংরেজি দৈনিকের সম্পাদক শেখ মুজিবকে জানান, ‘এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ লাখ বেকার আছে, তাদের সরকার টেকনিক্যাল ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। কাহারও ছয় মাস লাগবে, কাহারও এক বছর, আর কাহারও চার বছর লাগবে। এদের ট্রেনিং হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজ মিলে যাবে। ট্রেনিংয়ের সময় সরকার এদের অ্যালাউন্স দেয়, যদিও তা যথেষ্ট নয়। ... তিন বছর পরে যদি কোনো দিন আসেন তবে দেখতে পাবেন, একটাও আর বেকার লোক নয়া চীনে নাই।”
চীনের সঙ্গে স্বাধীন বাংলাদেশের মেলবন্ধন রচিত হয় শহীদ জিয়ার আমলে। ১৯৭৭ সালের ২ থেকে ৫ জানুয়ারি চীন সফরে যান প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান। চার দিনের ওই শুভেচ্ছা সফরে তাঁকে সরকারপ্রধানের মর্যাদা দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়। ২ জানুয়ারি বিকালে বেইজিং বিমানবন্দরে চীনের সর্বোচ্চ নেতা হুয়া কুয়ো ফেং তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপপ্রধানমন্ত্রী লি শিয়েন লিয়েন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুয়াং হুয়া এবং অন্যান্য নেতা। বিমানবন্দর সাজানো হয় দুই দেশের পতাকা দিয়ে। হাজার হাজার শিশু ও সর্বস্তরের মানুষ তীব্র শীত উপেক্ষা করে বাংলাদেশি নেতাকে অভ্যর্থনা জানায়। জিয়াউর রহমানের সম্মানে দেওয়া ভোজসভায় দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও বহিঃশত্রুর চাপ উপেক্ষা করে এগিয়ে চলার জন্য বাংলাদেশি নেতার ভূয়সী প্রশংসা করেন চীনা উপপ্রধানমন্ত্রী লি শিয়েন লিয়েন।
বাংলাদেশ ও চীনের মৈত্রী বন্ধনের ভিত রচনা করেন মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। ১৯৫২ সালে তিনি শেখ মুজিবসহ তাঁর প্রিয় শিষ্যদের পাঠান চীন সফরে। ১৯৬৩ সালে তিনি নিজে চীন সফর করেন। মওলানা ভাসানী তাঁর চীন সফরের স্মৃতিচারণা করেছেন ‘মাও সে তুং-এর দেশে’ নামের বইতে। চীনে মওলানা ভাসানীকে যে সংবর্ধনা দেওয়া হয়, তা একমাত্র রাষ্ট্রপ্রধানদেরই প্রাপ্য। হুজুর ভাসানী তাঁর চীন সফরের স্মৃতিচারণ করে লিখেছেন, ‘আমরা যখন পিকিং পৌঁছিলাম তখন অবিরাম বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি আর হিমেল হওয়ার ঝাপটায় ঘরের বাইরে বেরুনো কষ্টদায়ক। কিন্তু সেই বৃষ্টি আর শীতের হাওয়া উপেক্ষা করেও বিমানবন্দরে কয়েক হাজার লোক আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। চীন সরকারের সহকারী প্রধানমন্ত্রী মার্শাল চেন ই এবং সরকার ও কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা আমাদের অভ্যর্থনা জানালেন।’
মওলানা ভাসানী যখন চীন সফর করেন, প্রেসিডেন্ট আইউব খান তখন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট। তিনি বেইজিংয়ে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল নবাবজাদা আগা মোহাম্মদ রাজাকে হুজুর ভাসানীর শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর রাখার নির্দেশ দেন। মওলানা চীন সফরকালে কয়েক দিন হাসপাতালে ছিলেন। হুজুর দেশি খাবার পছন্দ করতেন। আর তাই রাষ্ট্রদূত প্রতিদিনই টিফিন ক্যারিয়ারে করে তাঁর বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসতেন। রাষ্ট্রদূতের এই আদরযত্ন মওলানার দৃষ্টি এড়ায়নি। তিনি রাষ্ট্রদূতকে উদ্দেশ করে উর্দুতে বলেন- ‘রাষ্ট্রদূত, আপনাকে কী বলে ধন্যবাদ জানাব জানি না। তবে আপনাদের আইউব খানের রাজনীতির মাহাত্ম্য এই, একজন পাঞ্জাবি যিনি মাছ-ভাতে অভ্যস্ত নন, তাঁকে টিফিন ক্যারিয়ার বয়ে নিয়ে বেড়াতে হচ্ছে আমার জন্য।’
রাষ্ট্রদূত জবাব দেন, ‘হুজুর আপনার কথাই ঠিক। চাকরি বাঁচানো ফরজ। আপনার জন্য দুই টুকরো মাছ এনে যদি সেই ফরজ পালন করতে পারি, তবে এর চেয়ে আনন্দের আর কী হতে পারে।’
পাদটীকা : মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী চীন সফর শেষে ঢাকায় ফেরেন করাচি হয়ে। করাচির মেয়র মওলানার সম্মানে নাগরিক সংবর্ধনার আয়োজন করেন। তাঁর গায়ে ছিল লংক্লথের পাঞ্জাবি আর পরনে কম দামি লুঙ্গি। মাথায় তালপাতার টুপি।
ভাসানী মঞ্চে উঠলেন। তাঁর বেশভূষা দেখে দর্শক-শ্রোতাদের গুঞ্জন, ‘ইয়ে তো মিসকিন হ্যায়!’ মওলানা কোরআন থেকে পাঠ করে ভাষণ শুরু করলেন। দর্শকদের মধ্যে শোনা গেল গুঞ্জন, ‘ইয়ে তো মাওলানা হ্যায়!’ ভাসানী বক্তৃতা শুরু করলেন বিশুদ্ধ উর্দুতে। এবার শ্রোতাদের প্রতিক্রিয়া, ‘আরে বাহ্, ইয়ে তো পলিটিশিয়ান হ্যায়!’ মওলানা তাঁর ভাষণে বিশ্বপরিস্থিতি ও সাম্রাজ্যবাদী শোষণনিপীড়নের কথা বললেন জোরালোভাবে। এবার সবার বিস্ময়, ‘ইয়া আল্লাহ, ইয়ে তো স্টেটসম্যান হ্যায়!’
♦ লেখক : সিনিয়র সহকারী সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন
ইমেইল : sumonpalit@gmail.com