চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে দুটি ক্যাথল্যাব মেশিন ছিল। এর মধ্যে ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে একটি নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু সচল থাকা মেশিনটিও অতিরিক্ত চাপের কারণে বিভিন্ন সময়ে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে বিপাকে পড়তে হয় গরীব-অসহায় রোগীদের। বর্তমানে বৃহত্তর চট্টগ্রামের হৃদরোগীদের এনজিওগ্রামসহ জীবনরক্ষাকারী কিছু চিকিৎসায় এই একটি মেশিনের ওপরই নির্ভর করতে হয়।
তবে প্রায় চার বছর চমেক হাসপাতালে যোগ হচ্ছে আরেকটি নতুন ক্যাথল্যাব মেশিন। ইতোমধ্যে মেশিনটি হাসপাতালের ১২নং ওয়ার্ডে স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ১২ ডিসেম্বর এটি স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। এটি চালু হলে চট্টগ্রামের হৃদরোগীদের জন্য আশার সঞ্চার হবে।
চমেক হাসপাতালে এনজিওগ্রাম করাতে খরচ হয় ৬-৭ হাজার টাকা। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালে খরচ হয় ২০-২৫ হাজার টাকা। হার্টের রিং স্থাপনে চমেক হাসপাতালে খরচ হয় ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা, কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালে খরচ হয় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা। বেসরকারি হাসপাতালে আর্থিকভাবে সামর্থবানরা করতে পারলেও চরম বিপাকে পড়তে হয় গরীব-অসহায়দের।
জানা যায়, পাঁচ বছর আগে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুটি এনজিওগ্রাম মেশিন বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। তবে দক্ষ জনবল সংকটের কারণে এসব মেশিন চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে একটি মেশিন চমেক হাসপাতালে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত ৮ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা-১ শাখার উপসচিব মো. শাহাদত হোসেন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ‘চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হৃদরোগী চিকিৎসার জন্য একটি উপযুক্ত ক্যাথল্যাব মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে স্থানান্তরের ব্যবস্থা নিতে হবে।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন বলেন, মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে একটা ক্যাথল্যাব মেশিন আসছে। বর্তমানে এটি স্থাপনের কাজ চলছে। আগামী ১২ ডিসেম্বর এটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করার কথা। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ক্যাথল্যাব মেশিন চালু থাকা অবস্থায় একমাত্র মেশিনটিতে দৈনিক গড়ে ১৫-২০টি এনজিওগ্রাম এবং ৫-৬টি রিং স্থাপনের কাজ করা যায়। এর বাইরে পার্মানেন্ট পেস মেকার (পিপিএম) স্থাপন ও পেরিপাইরাল এনজিওগ্রামের কাজও চলে একই মেশিনে। অতিরিক্ত চাপের কারণে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে দুইবার যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়।
তাছাড়া, চট্টগ্রামে সরকারিভাবে চালু থাকা একমাত্র ক্যাথল্যাব অকেজো হলেই রিং পরানো কিংবা এনজিওগ্রাম পরীক্ষা বন্ধ রাখতে হয়। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় রোগীদের। ক্যাথল্যাব মেশিন দিয়ে রোগীদের পেসমেকার স্থাপন, করোনারি এনজিওগ্রাম, এনজিওপ্লাস্টি ও ভাল্ব সম্প্রসারণের (পিটিএমসি) মত জীবন রক্ষাকারী আধুনিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।
বিডি-প্রতিদিন/জামশেদ