কৃষ্ণসাগরে ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় বেঁচে গেলেও বিপদে আছেন জাহাজটির বাংলাদেশি নাবিক ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুল ইসলাম। বুলগেরিয়া উপকূলে অন্য দেশের নাবিকদের সঙ্গে তিনি ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যাওয়া জাহাজটিতে আটকা পড়েছেন। একদিকে বৃষ্টি ও তীব্র শীত, অন্যদিকে ফুরিয়ে আসছে খাবার। আটকে পড়া নাবিক মাহফুজ বলেন, ‘আমাদের জীবন ঝুঁকির মুখে। জানা গেছে, গত ২৮ নভেম্বর কৃষ্ণসাগরে তেল পরিবহনকারী জাহাজ এমটি কায়রোস ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জাহাজটিতে চার বাংলাদেশিসহ ২৫ জন নাবিক ছিলেন। তারা প্রাণে বেঁচে যান। তাদের মধ্যে তিন বাংলাদেশি চিকিৎসা শেষে দেশের পথে রওনা হয়েছেন। মাহফুজসহ ১০ জনকে জাহাজটি নিরাপদে তীরে নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশ মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমও) সাধারণ সম্পাদক ক্যাপ্টেন সাখাওয়াত হোসাইন জানান, হামলার পর ২৫ নাবিককে উদ্ধার করেছিল তুরস্কের কোস্টগার্ড। জাহাজ উদ্ধার ও নিরাপদে তীরে আনার জন্য তাদের মধ্যে ১০ জনকে আবার জাহাজে পাঠানো হয়। এক পর্যায়ে জাহাজটি ভাসতে ভাসতে বুলগেরিয়ার জলসীমায় চলে যায়। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশি নাবিক মাহফুজের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। উদ্ধার করার জন্য জাহাজ থেকে বুলগেরিয়ার কোস্টগার্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু তারা এখনো সাড়া দেননি। দু-তিন দিনের মধ্যে উদ্ধার করা না হলে নাবিকদের জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে।
আটকে পড়া নাবিক মাহফুজুল ইসলামের সঙ্গে হোয়াটস অ্যাপে যোগাযোগ করা হলে তিনি শনিবার রাতে বলেন, জাহাজটি ৩০ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইস্তাম্বুুল উপকূলে নোঙর করা ছিল। কিন্তু দুই দিন আগে আবহাওয়া খারাপ হয়ে গেলে ভাসতে ভাসতে বুলগেরিয়া কোস্টের কাছে চলে যায়। এখানে উদ্ধারের জন্য কারও কোনো সহযোগিতা মিলছে না। বৃষ্টি ও সেই সঙ্গে তুষার পড়ায় তীব্র শীত। জাহাজ সম্পূর্ণ ডেড অবস্থায় আছে। ইঞ্জিন রুম এবং থাকার জায়গা আগুনে পুড়ে গেছে। জেনারেটর কাজ করছে না। খাবার শেষ হয়ে আসছে। আমাদের জীবন ঝুঁকির মুখে। জানি না এভাবে কতদিন থাকতে পারব।